মায়ের মতো আদর




আমি একজন প্রবাসী বাঙালি। বেশ কয়েক বছর হলো সুদূর এক বিদেশী দেশে বসবাস করছি। এখানে জীবনযাপন অনেকটাই আলাদা। কিন্তু কিছু জিনিস আছে যেগুলি আমি খুব মিস করি। তার মধ্যে অন্যতম হলো আমার মায়ের হাতের রান্না।
আমি যখন বাংলাদেশে থাকতাম, তখন আমার মা প্রতিদিনই আমার জন্য নানান সুস্বাদু খাবার বানিয়ে দিতেন। তাঁর হাতের বিরিয়ানি, মাছের ঝোল, চিকেন কারি ইত্যাদি খাবারগুলো ছিল আমার প্রিয়। বিদেশে এসে বুঝেছি যে, মায়েদের হাতের রান্নার স্বাদ কোনো রেস্তোঁরার খাবারের সঙ্গে তুলনা করা যায় না।
একদিন আমার এক বন্ধু আমাকে জানালো যে, আমাদের এলাকায় একটি নতুন বাংলাদেশী রেস্তোঁরা খুলেছে। সেখানে নাকি আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার পাওয়া যায়। আমি খুব उत्सुक হয়ে গেলাম। পরের দিনই আমি সেই রেস্তোঁরায় গেলাম।
রেস্তোঁরাটি ছিল ছোট এবং সাদাসিধা। কিন্তু পরিবেশটা ছিল খুবই আরামদায়ক। আমি একটি টেবিলে বসলাম এবং মেনু কার্ডটি নিয়ে দেখতে লাগলাম। মেনুতে আমার প্রিয় সব খাবারের নাম ছিল। আমি অর্ডার দিলাম বিরিয়ানি, মাছের ঝোল এবং চিকেন কারির।
কিছুক্ষণ পরে খাবার এলো। আমি খাবারের প্লেটটি নিয়ে খেতে শুরু করলাম। প্রথম কামড়েই আমার চোখ বন্ধ হয়ে গেল। স্বাদটা ছিল ঠিক আমার মায়ের হাতের রান্নার মতো। সেই মুহূর্তে আমার মনে হলো আমি বাংলাদেশে রয়েছি, আমার মা আমার জন্য খাবার বানিয়ে দিয়েছেন।
আমি খেয়ে খেয়ে কাঁদতে লাগলাম। আমার বন্ধু আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, "কী হয়েছে? খাবারটা ভালো লাগছে না?"
আমি তাকে জড়িয়ে ধরলাম এবং বললাম, "এই খাবারের স্বাদ আমার মায়ের হাতের রান্নার মতো।"
আমার বন্ধুও আমাকে জড়িয়ে ধরলো এবং বললো, "আমি জানতাম যে, তুমি এই খাবার খেয়ে খুশি হবে।"
আমি সেদিন রেস্তোঁরা থেকে খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। খাবারের প্লেটটি আমার টেবিলে রেখে দিয়ে আমি আমার মায়ের ছবির সামনে বসলাম। আমি মায়ের ছবিটি নিয়ে হাতে নিলাম এবং বললাম, "মা, আমি তোমাকে খুব মিস করি।"
আমি জানি যে, আমি আমার মায়ের মতো রান্না করতে পারবো না। কিন্তু সেই রেস্তোঁরার খাবার খেয়ে আমার মনে হলো আমার মা আমার পাশে রয়েছেন। তিনি আমাকে ভালোবাসছেন এবং আমাকে আদর করছেন।