মে দিবস কী?




মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার দাবির দিন, ঐক্যের দিন। প্রতি বছর ১ মে তারিখে বিশ্বব্যাপী মে দিবস পালন করা হয়। এ দিনে শ্রমজীবীরা তাদের দাবি-দাওয়া পূরণের জন্য সভা-সমাবেশ, মিছিল ও প্যারেডের আয়োজন করে। মে দিবসের ইতিহাস কয়েক শতাব্দী পুরাতন। ১৮৮৬ সালে শিকাগোর হে মার্কেট ঘটনার পর থেকেই ১ মে তারিখটিকে মে দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। হে মার্কেট ব্যাপারটি এভাবে ঘটেছিল-

১৮৮৬ সালের ১ মে তারিখে শিকাগো শহরের হে মার্কেট স্কয়ারে শ্রমিকদের জড়ো হওয়ার কথা ছিল। তাদের দাবি ছিল আট ঘণ্টার কার্যদিবস। পুলিশ কর্তৃপক্ষ সেই জমায়েত করতে দেয়নি। এর প্রতিবাদে হে মার্কেট স্কয়ারে জড়ো হওয়া শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে কয়েকজন শ্রমিক নিহত হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে ১৮৯০ সালে প্যারিসের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকে ১ মে তারিখটিকে মে দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মে দিবস শুধু একটি ছুটির দিন নয়, এটি শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রামের প্রতীক। প্রতি বছর এই দিনটি পালনের মাধ্যমে আমরা সেই সব শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই যারা আমাদের জন্য ভালো কাজের পরিবেশ তৈরি করেছেন। মে দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমাদের অধিকার আদায় করতে হলে সংগঠিত হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মে দিবসের ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। ১৮৯৪ সালে পুলম্যান স্ট্রাইকের পরে ১ মে তারিখটিকে মে দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই স্ট্রাইকের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইউজিন ভি ডেবস। এই স্ট্রাইকের ফলে আমেরিকায় শ্রমিকদের অধিকার আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দেয়।

মে দিবস পালনের নিয়ম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। কিছু দেশে এই দিনটি একটি জাতীয় ছুটির দিন। অন্য কিছু দেশে শুধুমাত্র শ্রমিকদের জন্য ছুটির দিন। মে দিবস পালনের নিয়ম যাই হোক না কেন, এই দিনটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার দাবির দিন হিসেবে পালিত হয়।

বাংলাদেশে মে দিবস একটি জাতীয় ছুটির দিন। এই দিনটি শ্রমিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। এই দিনটি পালনের মধ্য দিয়ে আমরা শ্রমজীবী মানুষের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানাই। তাদের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রতিজ্ঞা করি।

মে দিবস শুভেচ্ছা জানিয়ে এই লেখা শেষ করলাম। সবাইকে মে দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।