যখন বুকে উঠে আসে ভারত-পাকিস্তান শব্দজোড়া




আমি একজন ক্রিকেটপ্রেমী। আমার কাছে ক্রিকেট মানে শুধুই খেলা নয়, এটা অনেক কিছু। এটা উত্তেজনা, আবেগ, রোমাঞ্চ, প্যাশন, অহঙ্কার, আনন্দ, দুঃখ, হতাশা সব কিছু মিলিয়ে একটা প্যাকেজ। কিন্তু যখন শোনা যায় "ভারত-পাকিস্তান" শব্দজোড়া, তখন ক্রিকেট আর থাকে না শুধুমাত্র খেলা, এটা হয়ে ওঠে একটা মহাকাব্য যুদ্ধ।
এমন না যে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হবে বলেই আমার গায়ে কাঁটা দাঁড়ায়। আসলে এই দুই দলের ম্যাচ মানে আমার দেশের বুকে আইসল্যান্ড থেকে শুরু করে, দক্ষিণের কন্যাকুমারী পর্যন্ত একটা উত্তেজনা তৈরি হয়ে যায়। যেন গোটা দেশটাই একটা স্টেডিয়ামে পরিণত হয়ে যায়। সকলেই নিজেদের দলকে সাপোর্ট করার জন্য প্রস্তুত। প্রস্তুত মিষ্টি, হালুয়া থেকে শুরু করে, ভাজা-পোড়া। আজ তো পাকিস্তানকে হারাতেই হবে। আমাদের দেশের পতাকাকে আজ আরও ψηঁচুতে তুলতে হবে।
আমার মনে পড়ে, ২০১১ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে আমাদের গোটা পরিবার টিভির সামনে বসেছিলাম। মনে হচ্ছিল যেন গোটা দেশই একসঙ্গে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবার যখন ভারতের বোলার বল ছুড়তো, তখন আমাদের সবাই একসঙ্গে চিৎকার করতাম। আর যখন আমাদের ব্যাটসম্যান রান তুলতো, তখন আমাদের চিৎকারে ঘরের জানলা কাঁপতো। শেষ পর্যন্ত ভারত জেতে গেল। সেদিন আমাদের গোটা পরিবারে আনন্দের আনন্দ ছিল না। আমাদের দেশ জিতে গেছে, এটাই যথেষ্ট ছিল আমাদের কাছে।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মধ্যে রয়েছে এক অদম্য উত্তেজনা, যা অন্য কোনো ম্যাচে আমরা খুঁজে পাই না। এটার মধ্যে রয়েছে আবেগ, রোমাঞ্চ, প্যাশন এবং খানিকটা অহঙ্কারও। আমরা সকলেই চাই আমাদের দেশ জিতুক। কিন্তু জিতুক বা হারুক, এই ম্যাচগুলো আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে আসে। আমাদের সবার মধ্যে জাগ্রত করে দেশপ্রেম।
তাই আজও যখন শুনবো "ভারত-পাকিস্তান" শব্দজোড়া, তখন আমার বুকে উঠে আসবে এক অদ্ভুত আবেগ। যেন আমাদের দেশের জন্য আমি কিছু করতে চাই। যেন আমাদের পতাকাকে আমি আরও উঁচুতে তুলতে চাই।