পৃথিবীর মিস ফিগার হওয়ার পদ্মিনী কলসাপুরে তাঁর জীবনের পরিকল্পনার কথা বললেন ডা: সুম্যা মাজুমদারের সঙ্গে।
আগের দিন রাতেই তিনি মিস ফিগার ওয়ার্ল্ড হয়েছেন। পুরো রাস্তা জুড়ে ফুটিয়ে তোলা তাঁর ছবি আর সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনন্দনের বন্যা। তাঁর বাবা অধীর দাস আর মা সুচিত্রা দাস তাঁর অর্জনকে শুধুমাত্র তাঁর অর্জন হিসেবে নয়, গোটা কলসাপুরের অর্জন হিসেবেই দেখছেন।
গোটা মহারাষ্ট্র, ভারতের নানা প্রান্ত থেকে অভিনন্দনের বৃষ্টিতে ভিজছেন তিনি। হাওয়াইয়ের সেই মঞ্চে উঠেই তিনি জানতেন, তিনি যে পথে হেঁটেছেন, সেটি সরল নয়। কিন্তু, অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পরিবারের সহায়তা তাঁকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
কলসাপুরের মেয়ের এই অর্জন আজ গোটা জগতে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে মিস ফিগার ফিটনেস ক্যাটাগরির এই খেতাব জিতেছিলেন কলসাপুরের জ্যোতি চিতে। এই অর্জনের পেছনে ছিল চিকিৎসক সুম্যা মাজুমদারের নিয়ন্ত্রিত ডায়েট ও ব্যক্তিগত ট্রেনার সুদীপ্তের তত্ত্বাবধান।
বিদ্যুতের তার থেকে নজর গেল কয়লা খনিতে। কলসাপুরের এই বাসিন্দা, নবজাতার বয়সেই হারিয়ে ফেলেছিলেন বাবাকে। হাওয়াইয়ে মিস ফিগার ফিটনেস ক্যাটাগরির খেতাব জিতে ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি। এই অর্জনের পেছনে আছে অক্লান্ত পরিশ্রম আর দৃঢ় সংকল্প। একটি বিমান সংস্থায় কাজ করা পদ্মিনী কলসাপুরে বারংবার জানাচ্ছেন, তাঁর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে।
তিনি বললেন, "যখন আমাকে ঘোষণা করা হল মিস ফিগার ফিটনেস, তখন আমার কানে কিছুই বোধ হল না। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। অনেকেরই ধারণা, এই ধরনের প্রতিযোগিতাগুলি শুধুমাত্র মডেলদের জন্য। কিন্তু, তা নয়। যে কোনও শিল্পেরই একটি কলা আছে, আর তাকে উজ্জ্বল করার সুযোগ এখানে।"
কেবল কি ফিটনেস, তাতে তিনি সীমাবদ্ধ নন। পড়াশোনায়ও বেশ ভাল। বিএসসি-তে তিনি প্রথম শ্রেণীতে পাশ করেছেন। সামাজিক কাজও করেন। কলসাপুরে গঠিত বেস্ট ক্ল্যাস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। কোভিডকালে তিনি মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়েছিলেন। তাঁর লক্ষ্য, সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা। আর তাই, মিস ফিগার ফিটনেসের মুকুট তাঁর কাছে শুধুই একটি শোভা নয়। সেই প্ল্যাটফর্ম, যা তিনি অন্যদের সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে ব্যবহার করবেন।
কিছু দিন আগে সোয়ারের বোট ক্লবের উদ্বোধনে যান তিনি। সেখানে তিনি জেলের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলেন। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান তাঁদের। দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের জন্য তাঁর সংস্থা বিদ্যালয়ও করার ইচ্ছে রয়েছে। তিনি বললেন, "আমি কলসাপুরের মেয়ে। এই শহরই আমার পরিচয়। যেভাবে সোনাকে খাঁটি করার জন্য আগুনে তপ্ত করা হয়, সেইভাবেই আমিও সমাজকল্যাণমূলক কাজের জন্য এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করব।"