যায়াল, খড়ে তিন্নিশ পাথরের দেশ!




তপ্ত গ্রীষ্মের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে হঠাৎ একদিন বেঁড়াতে যাবার প্ল্যান হলো। এপ্রিল মাসের তপ্ত গ্রীষ্মে বেড়াতে যাওয়ার কথা ভাবাটাও পাগলামী ছিল। কিন্তু ভ্রমণের ক্ষেত্রে আমরা একেবারের রকস্টার। তাই যেভাবেই হোক গিয়েছিলাম একদল তরুণ বন্ধুবান্ধব।

যে শহরে গিয়েছিলাম সেটা খুব বেশি দূরেও না। মানে 260 কিমি দূরে। শহরের নাম জয়পুর। শুনেছিলাম এই শহরটা সোনা রঙের। আমাদের দেশের বর্তমানে যে সরকার সেই সরকারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রীও এই জয়পুর শহরেরই লোক। নাম বसुন্ধরা রায়ে।

একটু জানবো?

জয়পুর ব্রিটিশ শাসনকালে মিজোরামের রাজধানী ছিল এবং এখনও এটি মিজোরাম রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এই শহরের অধিকাংশ মানুষ খ্রিস্টান। জয়পুরের পুরাতন নাম ছিল "চিনলুংতুর জুস"।

যাবার পথটা অসাধারণ

আমরা সকাল বেলায় রওনা হয়েছিলাম। রাস্তাটা খুবই মনোরম। পাহাড়, জঙ্গল, নদী সব মিলিয়ে একটা অপূর্ব সৌন্দর্য। ভাগ্যিস গ্রীষ্মের শেষের দিকে যাওয়ার কারণে খুব একটা গরম পড়ে নি। আমরা সারাদিন গাড়িতে করে ভ্রমণ করেছি। অনেক পুরানো গীর্জা দেখেছি, প্রাচীন মিজোদের ইতিহাস জেনেছি। এছাড়াও অনেক আধুনিক স্থাপত্যও দেখেছি।

পাথরের আশ্চর্য

যায়াল হলো একটা সত্যিই আশ্চর্য জায়গা। এখানে তিন্নিশটি বিশাল পাথর আছে। এই পাথরগুলো এমনভাবে সাজানো আছে যে মনে হয় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এগুলোকে মিজোরা "হ্নাম হ্লিয়া" বলা হয়। হ্নাম হ্লিয়া মানে হলো যায়াল পাথরের স্তূপ। এই পাথরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় পাথরটির নাম "তু নগ"। তু নগ মানে হলো "বালির পাথর"।

  • জয়পুর শহরে আরও অনেক কিছু দেখার আছে, যেমন-
  • অলং
  • তুতুপা দাশ
  • মুরলেন ন্যাশনাল পার্ক
  • লিমসিম চিহিদ্বার
  • টং লিং হ্রদ
তিন্নিশ পাথর কিভাবে সাজানো হলো?

এই পাথরগুলো কীভাবে সাজানো হলো সেটা নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। কিছু লোক বিশ্বাস করে যে এই পাথরগুলো একটা রাজার আদেশে সাজানো হয়েছিল। আবার কিছু লোক বিশ্বাস করে যে এই পাথরগুলো স্বর্গ থেকে পড়েছে।

জাদুকরী কিংবদন্তি

যায়ালের তিন্নিশ পাথরের সঙ্গে অনেক কিংবদন্তি জড়িত। কিছু লোক বিশ্বাস করে যে এই পাথরগুলো জাদুকরী শক্তি আছে। তারা বিশ্বাস করে যে এই পাথরগুলোতে সুরক্ষা এবং নিরাময়ের শক্তি আছে।

যায়ালের এই তিন্নিশ পাথরের আমার কাছে সবচেয়ে মনোরম লেগেছে। মিজোদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, কিংবদন্তি সব মিলিয়ে এই স্থানকে অসাধারণ করে তুলেছে। এই স্থানটা সত্যিই দেখার মতো।