রঙিন উৎসব: লোহড়ি
যদিও শীতকাল আমাদের কাছে একটু অস্বস্তিদায়ক বলে মনে হয়, তবে লোহড়ির আগমন শীতের দিনগুলিকে একটি রঙিন ব্যাপারে পরিণত করে। উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে পালন করা হয় এই উৎসবটি, বিশেষ করে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি এবং হিমাচল প্রদেশ।
লোহড়ির আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
লোহড়ির প্রাক্কালে, জল এবং আগুনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়। এই অনুষ্ঠানগুলিকে "लोहड़ी" বলা হয়, যেখানে "लो" এর অর্থ "লোহা" এবং "डी" এর অর্থ "দীপক"। লোহার তাওয়া ব্যবহার করে তৈরি মিষ্টি খাবার দিয়ে আগুনে অর্ঘ্য দেওয়া হয়। এই আগুনকে 'लोहड़ी' বলা হয়, যাকে পবিত্র বলে মনে করা হয় এবং এটি খারাপ শক্তি দূর করার প্রতীক।
লোহড়ির কিंবদন্তি
লোহড়ির সাথে অনেক কিংবদন্তি জড়িত। একটি জনপ্রিয় কিংবদন্তি অনুসারে, লোহড়ির উৎস "दुल्ला भट्टी" এর গল্পে নিहित। দুল্লা ভট্টি ছিলেন একজন লোককাহিনীর চরিত্র, যিনি শের শাহ শুরির শাসনামলে পাঞ্জাবের শাসক ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সাহসী এবং দয়ালু রাজা, যিনি গরিবদের সাহায্য করতেন এবং অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতেন।
লোহড়ি উদযাপন
লোহড়ি সাধারণত জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে পালন করা হয়, যা মকর সংক্রান্তির পূর্বদিন পড়ে। উৎসবটি সন্ধ্যার পরে শুরু হয়, যখন লোকেরা আগুন জ্বালিয়ে তার চারপাশে জড়ো হয়। তারা গান গায়, নাচে এবং আনন্দ করে। আগুনের সামনে ভুট্টা, গুড় এবং তিলের লাড্ডু প্রদান করা হয়।
লোহড়ির বিশেষ খাবার
লোহড়ির উৎসবের সাথে জড়িত বিশেষ খাবার হল "दाल चना"। এটি মসুর ডাল এবং কালো চনার একটি সংমিশ্রণ। এছাড়াও, "सरसों का साग" এবং "मक्की की रोटी"ও এই উৎসবের একটি অপরিহার্য অংশ। লোহড়ির আগুনে ভুট্টা এবং আখও পোড়ানো হয়।
সামাজিক তাৎপর্য
লোহড়ি একটি সামাজিক উৎসব, যেখানে সম্প্রদায়ের সদস্যরা একসাথে জড়ো হয়। এটি সামাজিক বন্ধন মজবুত করে এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে একতার অনুভূতি তৈরি করে। লোহড়ি উৎসবের মাধ্যমে আগামী ফসলের ঋতুর জন্য প্রার্থনাও করা হয়।
উপসংহার
লোহড়ি উত্তর ভারতের একটি রঙিন এবং আনন্দদায়ক উৎসব। এটি শীতকালের শেষ এবং এবারের শুরুকে চিহ্নিত করে। লোহড়ির আধ্যাত্মিক তাৎপর্য, কিংবদন্তি, উদযাপন, বিশেষ খাবার এবং সামাজিক সংস্কৃতি একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা প্রদান করে।