রাজা




মানুষদের রাজা, প্রাণীদের রাজা, জীবজগতের রাজা – এই উপাধিগুলোর সঙ্গে আমাদের সংস্পর্শ আছে ছোটোবেলা থেকেই। কিন্তু রাজার চরিত্র কী, তিনি কী কাজ করেন, কী তাঁর দায়িত্ব- এমন প্রশ্ন হয়তো মাথায় আসে না।
এইবার কল্পনা করুন, আপনিই একজন রাজা। আপনাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো একটা রাজ্য শাসন করার। হঠাৎ করে নিজেকে রাজার ভূমিকায় ভাবতে পারছেন কি? কী ভাবে রাজ্য শাসন করবেন বুঝতে পারছেন?
সত্যি বলতে কি, একটা রাজ্য শাসন করা খুবই জটিল ব্যাপার। রাজার কাজ অবিচ্ছিন্ন। সারা দিন রাজ্যের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য নানা সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যা সব সময় সঠিক হয় না। তবুও রাজার দায়িত্ব হলো— কিছু ভুল সত্ত্বেও, সব ভালো রাখার দায়িত্বটা নেওয়া। রাজাকে সারাক্ষণই দীর্ঘদর্শিতা দেখাতে হয়। তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, সবচেয়ে দ্রুত এবং সবচেয়ে ভালো উপায়ে। তাঁকে চিন্তা করতে হয় ভবিষ্যতের কথা, বর্তমানের নয়। এটাই আসল রাজার কাজ।
রাজার কাজ আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন জানা যায় যে, সব রাজা একই রকম নন। কোনো কোনো রাজা সত্যিকারের বীর, যাঁরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। আবার কোনো কোনো রাজা খুবই চতুর। তাঁরা কৌশলের মাধ্যমে রাজ্য শাসন করেন। তাঁরা সামনের থেকে যুদ্ধ করেন না, কিন্তু তাঁদের দূরদর্শিতা এবং কৌশলজ্ঞানে রাজ্য হয়ে ওঠে আরও সমৃদ্ধিশালী।
তবে সবচেয়ে বড় রাজা তিনিই যিনি দুটো বিষয়কেই সুন্দর ভাবে সামলে চলেন। যিনি সামনের থেকে যুদ্ধ করেন, যিনি রণক্ষেত্রের রাজা। আবার যিনি চিন্তা করেন রাজ্যের সবথেকে দীর্ঘমেয়াদী কল্যাণের কথা, যিনি শাসনক্ষেত্রের রাজা। যিনি দুজনেই, তিনিই একজন সার্থক রাজা।
এই সব কিছুর পাশাপাশি, রাজাকে অবশ্যই হতে হবে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। তাঁর দেশের জন্য তাঁকে সবসময়ই প্রস্তুত থাকতে হবে। তাঁকে রক্ষা করতে হবে তাঁর প্রজাদেরকে, রাজ্যের সার্বভৌমত্বকে। এমনকী প্রয়োজনে নিজের জীবনকেও দান করতে হয়। তবেই একজন রাজাকে বলা যাবে সত্যিকারের রাজা।
সুতরাং, একজন রাজা হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানজনক। এই পদে বসলে অনেক ভার আসে, তবে সেই ভার মাথা পেতে নেওয়াই রাজার দায়িত্ব।