উত্তরের প্রান্তে ছোট একটি শহরে, যাকে আলোকিত করে একটি প্রাচীন নদী, বাস করতেন রত্নম। বৃদ্ধ বয়সে তাঁর গায়ের রং ছাই ফেলেছিল এবং তাঁর চোয়ালে গভীর খাঁজ পড়েছিল জীবনের অভিজ্ঞতার। তিনি ছিলেন একটি ছোট্ট দোকানের মালিক, যেখানে ছিল খাবার এবং জীবনের অন্যান্য ছোটখাটো জিনিস, যা তাকে এবং তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট ছিল।
রত্নমের দোকানের সামনের অংশ ছিল খোলা, যা তাকে শহরের রাস্তার দৃশ্য উপভোগ করতে দেয়। তিনি প্রতিদিন সকালে দোকানের দরজা খুলতেন, তাঁর হাত বেঁধে শুভ্র সুতির প্যাঁচালীতে, এবং তারপর শহরের বাসিন্দারা যখন কাজে যাচ্ছে, বাজার করছে বা কেবল আড্ডা দিচ্ছে তখন তিনি তাদের দেখতেন। তিনি শহরের গল্পগুলো জানতেন, জানতেন কাদের ছেলে হচ্ছে, কার মেয়ে বিয়ে করছে, এবং কারা বাজার থেকে কী কী কিনছে।
একদিন সকালে, রত্নম যখন তাঁর দোকান খুলছিলেন, তখন তিনি কিছু লোককে তাঁর দোকানের সামনে জড়ো হওয়া দেখলেন। তাঁরা তর্ক করছিলেন, তাঁদের গলার স্বর হঠাৎ উঁচু হচ্ছিল আবার হঠাৎ নামছিল। রত্নম তাঁদের কাছে গেলেন এবং দেখলেন তাঁরা একটি ছোট্ট কুকুর নিয়ে তর্ক করছেন, যা দুই ভ্রাতার মধ্যে ভাগ করা নিয়ে তাঁরা একমত হতে পারছিলেন না।
একজন ভাই বলছিলেন কুকুরটি তাঁর, কারণ তিনি এটি খুঁজে পেয়েছিলেন, অন্যজন বলছিলেন এটি তাঁর কারণ এটি তাঁর বাড়ির উঠানে এসেছিল। তাঁরা এতটাই আবেগী হয়ে পড়েছিলেন যে তাঁরা কেউ কারো কথা আর শুনছিলেন না।
রত্নম অপেক্ষা করেছিলেন, তাঁদের তর্ক শেষ হওয়া পর্যন্ত। তারপর তিনি তাঁদের সামনে এসে বললেন, "আমার বন্ধুরা, এই তর্কের কোনো মানে নেই। কুকুরটি কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি নয়। এটি একটি স্বাধীন প্রাণী, যা যেতে পারে যেখানে চায়। তোমরা এটিকে তোমাদের বাড়িতে আটকে রাখতে পারো না।"
ভাই দু'জনই কিছুক্ষণ রত্নমের কথায় চিন্তা করলেন। তারপর বড় ভাইটি বললেন, "তুমি ঠিক বলছ।" তারপর তাঁরা দু'জনেই কুকুরটিকে অবাধ ছেড়ে দিলেন, এবং এটি রাস্তায় দৌড়ে গেল, তার লেজটি আনন্দে দোলাচ্ছে।
রত্নম তাঁর দোকানের দুয়ারে দাঁড়িয়ে কুকুরটির স্বাধীন ভাবে দৌড়ানো দেখলেন। তিনি জানতেন যে এটি একটি ছোট ঘটনা, কিন্তু এটি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিল যে স্বাধীনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।
আমরা সবাই স্বাধীন প্রাণী। আমরা যা চাই তা করতে, যেখানে চাই সেখানে যেতে স্বাধীন। কিন্তু কখনও কখনও আমরা আমাদের স্বাধীনতা অন্যদের জন্য বিসর্জন দিই। আমরা এমন কাজ করতে বা এমন জিনিস হয়ে উঠতে বাধ্য হই যা আমরা চাই না, কারণ আমরা ভয় পাই যে যদি আমরা তা না করি তবে আমরা একা হয়ে যাব বা ভালোবাসা হারাব।
কিন্তু সত্যিকারের স্বাধীনতা এ সম্পর্কে নয়। এটা সত্য হওয়ার সম্পর্কে, তুমি কে তা প্রকাশ করার সম্পর্কে, যা তোমাকে খুশি করে তা করার সম্পর্কে। এবং এটি সবসময় সহজ হয় না, কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদে এর মূল্য।
তাই আজ জিজ্ঞেস করো নিজেকে, তুমি কি সত্যিকারে স্বাধীন? অথবা তুমি কি এমন জীবনযাপন করছ যা অন্যরা তোমার জন্য বেছে নিয়েছে? যদি তা হয়, তাহলে আজই তোমার স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে শুরু করো। এটি সহজ হবে না, কিন্তু এটি এর মূল্য।
কারণ স্বাধীনতা হল প্রকৃত সম্পদ। এটি এমন কিছু যা কোনো কেউ তোমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে না। এবং এটি এমন কিছু যা তোমাকে সত্যিকারের অর্থে সুখী করে তুলতে পারে।