বসন্তের মনোরম মাস চৈত্রে শুক্লপক্ষের নবম তিথিতে পালিত হয় রামনবমী। এদিন ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের জন্মদিন উপলক্ষে পুরা বিশ্বের হিন্দুরা উৎসব পালন করেন। রামনবমী হল হিন্দুদের অন্যতম প্রধান উৎসব। এদিন মন্দিরে পূজা-অর্চনা, রামায়ণ পাঠ, ভজন-কীর্তন এবং রামচন্দ্রের জীবনাশ্রয় মন্দির পরিদর্শন করা হয়।
প্রাচীন ভারতবর্ষে অযোধ্যার রাজা ছিলেন দশরথ। তার তিনটি রানী ছিলেন - কৌশল্যা, কৈকেয়ী এবং সুমিত্রা। কিন্তু তাঁর কোনো সন্তান ছিল না। তাই তিনি ঋষি বশিষ্ঠের পরামর্শে একটি পুত্রকাম যজ্ঞ করেন। যজ্ঞের ফলে অগ্নিদেব প্রদত্ত পায়স কৌশল্যা, কৈকেয়ী এবং সুমিত্রার মধ্যে বিতরণ করা হয়।
পায়স খাওয়ার পর কৌশল্যা রামচন্দ্রকে জন্ম দেন, কৈকেয়ী লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্নকে জন্ম দেন এবং সুমিত্রা ভরত ও শত্রুঘ্নকে জন্ম দেন। রামচন্দ্রের জন্ম হয় চৈত্র শুক্লপক্ষের নবম তিথিতে দুপুরবেলা। তাই এই দিনটি রামনবমী হিসাবে পালিত হয়।
রামচন্দ্র হলেন মর্যাদাপুরুষোত্তম। তিনি ধর্মের পালনকারী, সত্যের উদাহরণ এবং ন্যায়ের প্রতীক। তাঁর জীবন হল শিষ্টাচার, নীতিবাদ এবং ভক্তির একটি অমূল্য দৃষ্টান্ত।
রামচন্দ্রের জীবন এবং শিক্ষা আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেয়। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল:
আজকের দিনে, রামনবমী পালন করার সময়, আমাদের রামচন্দ্রের জীবন এবং শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। তাঁর জীবন হল সত্য, ন্যায় এবং ধর্মের একটি জীবন্ত দৃষ্টান্ত। আমরা তাঁর চরণে শরণাগত হওয়ার এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণ করার প্রতিজ্ঞা করি।
রামনবমী উৎসবটি ভারত এবং বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ এবং ভক্তি সহকারে পালিত হয়। এই দিনে মন্দিরগুলোতে বিশেষ পূজা-অর্চনা, রামায়ণ পাঠ, ভজন-কীর্তন এবং মহাপ্রসাদের আয়োজন করা হয়।
কিছু স্থানে, রামনবমীর দিনে রামলিলা আয়োজন করা হয়। রামলিলা একটি নাটকীয় প্রদর্শন যেখানে রামচন্দ্রের জীবন এবং লঙ্কা জয়ের গল্পটি অভিনয় করা হয়। এটি একটি জনপ্রিয় উৎসব যা সব বয়সের লোকেরা উপভোগ করে।
রামনবমী হল ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের প্রতি আমাদের ভক্তি এবং শ্রদ্ধার প্রকাশের একটি দিন। এই দিনে, আমরা তাঁর জীবন এবং শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণ করার প্রতিজ্ঞা করি।