এই জম্মু-কাশ্মীরের এক অদ্বিতীয় জেলা, যা হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। এমন একটা জায়গা যেটা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক আশ্চর্যজনক মিশ্রণ।
আমার প্রথম সফর রিয়াসীতে ছিল কিছু বছর আগে, যখন আমি উত্তর ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলগুলো ঘুরছিলাম। রিয়াসীর বিস্তীর্ণ পাহাড়ি সড়কগুলো আমাকে অবাক করে দিয়েছিল, যা সবুজ উপত্যকা এবং জলপ্রপাতের মধ্য দিয়ে ঘুরছিল। আমার গন্তব্য ছিল মা বৈষ্ণো দেবী মন্দির, যা একটি অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান এবং প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত এখানে আসেন।
মন্দিরটি প্রায় 5,300 ফুট উঁচু একটি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত। যাত্রা শুরু করলাম নীচের শহর কটরা থেকে। প্রায় 12 কিলোমিটারের এই যাত্রাপথটি পাহাড়ি ঢালের মধ্য দিয়ে উঁচু হচ্ছিল। আমি পদব্রজে গেলাম, পথে পথে বিশ্রামের জন্য পানশালা এবং খাবারের দোকান ছিল। যাত্রাটি ক্লান্তিকর ছিল, কিন্তু পাহাড়ি দৃশ্যগুলো আমাকে চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
অবশেষে যখন আমি মন্দিরে পৌঁছলাম, তখন অনুভবটা ছিল আশ্চর্যজনক। মন্দিরের সাদা মার্বেলের গম্বুজটি আকাশে উঁচু হয়েছিল। ভিতরে, গুহায়, মা বৈষ্ণো দেবীর তিনটি প্রতীক ছিল - একটি পাথর, একটি সেন্সর এবং একটি ত্রিশূল।
দর্শন শেষ করে আমি পাহাড়ের উপরে আরো উঁচুতে উঠলাম। সেখানে নানা রকম গুহা মন্দির ছিল, যা হিন্দু দেব-দেবীদের উৎসর্গীকৃত। একটা গুহাতে আমি স্বামী বিবেকানন্দের সমাধি খুঁজে পেয়েছিলাম।
রিয়াসী শুধু ধর্মীয় স্থানই নয়, এর অন্যান্য দর্শনীয় স্থানও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সুরিনসর হ্রদ, যা এর সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। হ্রদের চারপাশে সবুজ পাহাড় এবং তাজা বাতাসের সাথে ভরা পরিবেশ রয়েছে।
রিয়াসীতে আরেকটি আকর্ষণ হল নানা ঘাটির গ্রাম। এটি একটি অত্যাশ্চর্যজনক গ্রাম যা উপত্যকার মাঝখানে অবস্থিত। গ্রামটি ছাদের উপর ছাদের উপর ঘর নিয়ে সাজানো, যা এটিকে একটি জাদুকরি চেহারা দেয়।
রিয়াসী ভ্রমণ আমার জন্য একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা ছিল। এটি এমন একটা জায়গা যেটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আধ্যাত্মিকতা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক আশ্চর্যজনক সমন্বয়। কেউ যদি হিমালয়ের পাদদেশে একটি বিশ্রামদায়ক এবং আধ্যাত্মিক পলায়নের সন্ধান করেন, তাহলে রিয়াসী নিখুঁত স্থান।
তাই যদি আপনার কখনও জম্মু-কাশ্মীর ভ্রমণের সুযোগ হয়, তাহলে রিয়াসী অবশ্যই আপনার ভ্রমণপথে রাখুন। আপনি বিস্মিত হবেন এবং স্মৃতির মধ্যে ধরে রাখা একটি অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।