স্বাধীন ভারতের রাজনীতিতে একটি কিংবদন্তি নাম লাল কৃষ্ণ আড়বাণী। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) সরকারের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে তিনি ভারতের রাজনৈতিক ভূদৃশ্যে গভীর প্রভাব রেখেছেন।
প্রাথমিক জীবন
আড়বাণী ৮ই নভেম্বর, ১৯২৭ সালে সিন্ধুর করাচীতে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। সিন্ধু মাদারশায় শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি পাস করেন।
দশেরা র্যালি
আড়বাণী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দশেরা র্যালির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ১৯৮৯ সালে রাম জন্মভূমি ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রবর্তিত এই র্যালি ভারতের রাজনৈতিক পরিচালনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯০ সালে আড়বাণীর নেতৃত্বে রথযাত্রা ভারতের রাজনৈতিক উত্তেজনাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়।
হিন্দুত্বের প্রবক্তা
আড়বাণীকে হিন্দুত্বের প্রবক্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারত তার হিন্দু সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি সর্বদা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
আটল বিহারী বাজপেয়ীর ঘনিষ্ঠ সহচর
আড়বাণী এবং আটল বিহারী বাজপেয়ী রাজনৈতিক জীবনে ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। তারা একসাথে বিজেপিকে ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেছেন। ১৯৯৮ সালে বাজপেয়ীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার গঠনে আড়বাণীর অবদান অপরিসীম।
ভারতের উপ-প্রধানমন্ত্রী
১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত আড়বাণী ভারতের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বিদেশী নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
জানপ্রিয় ইতিহাসবিদ
রাজনীতি ছাড়াও আড়বাণী একজন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ। তিনি "মাই কান্ট্রি মাই লাইফ" সহ বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। তার লেখায় ভারতের ইতিহাস এবং রাজনীতির অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ বিশ্লেষণ রয়েছে।
সম্মান ও পুরস্কার
আড়বাণীর রাজনৈতিক এবং সাহিত্যিক অবদানের জন্যে তাকে বেশ কয়েকটি সম্মান এবং পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। ২০০৮ সালে তিনি সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান ভারত রত্ন পান।
লাল কৃষ্ণ আড়বাণী স্বাধীন ভারতের একজন কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ। তিনি হিন্দুত্বের একজন প্রবক্তা এবং একটি শক্তিশালী এবং নিখুঁত ভারত নির্মাণের জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তিনি ভারতীয় রাজনীতিতে একটি প্রেরণাসূত্র এবং তার লেগ্যাসি আগামী বছরগুলোতে তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে থাকবে।