বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব একজন খ্যাতিমান ভারতীয় রাজনীতিবিদ। তিনি তার ক্যারিজম্যাটিক ব্যক্তিত্ব এবং মজাদার স্টাইলের জন্য পরিচিত। যদিও তার রাজনৈতিক কর্মজীবনে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তবুও তিনি গরিব এবং নিম্নবর্গের মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় রয়েছেন।
লালু প্রসাদ যাদবের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১১ জুন গোপালগঞ্জ জেলার ফুলওয়ারিয়ায়। তিনি গণপত ঠাকুর এবং মুন্নি देवीর সন্তান। লালুর পিতা গরীব কৃষক ছিলেন এবং মা গৃহিণী ছিলেন।
লালু প্রসাদ যাদব স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাত্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি কার্যর্তন মহাবদ্যালয়ে আইনে স্নাতক প্রাপ্ত হন। আইনে স্নাতক হওয়ার পর, লালু প্রেমিলা দেবীকে বিয়ে করেন। তাদের দু'টি মেয়ে রুবি রায় এবং মীসা ভারতী এবং দুই ছেলে তেজ প্রতাপ যাদব এবং তেজস্বী যাদব।
১৯৭৭ সালে লালু প্রসাদ যাদবের রাজনৈতিক কর্মজীবন শুরু হয়। যেখানে তিনি বিহার বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে, তিনি বিহারের রাজনীতিতে একটি প্রধান শক্তি হয়ে ওঠেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
লালু প্রসাদ যাদবের শাসনকালে, বিহারে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তিনি গরিবদের জন্য অনেক কল্যাণকরী প্রকল্প চালু করেছিলেন। তিনি রাস্তা, সেতু এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো অবকাঠামোগত উন্নয়নেও মনোনিবেশ করেছিলেন।
যদিও, লালু প্রসাদ যাদবের রাজনৈতিক কর্মজীবনে দুর্নীতির অভিযোগের ছায়াও রয়েছে। তাকে চারা ঘুটালি কেলেঙ্কারীতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই কেলেঙ্কারীটি একটি পশু খাদ্য ঘুষকাণ্ড, যেখানে অর্থ ফেরত পাওয়া ছাড়াই কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য পশুখাদ্য কিনেছিল।
দুর্নীতির অভিযোগের কারণে লালু প্রসাদ যাদবকে ২০১৩ সালে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং জেলে পাঠানো হয়েছিল। ২০১৭ সালে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
বর্তমানে, লালু প্রসাদ যাদব সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে, তিনি এখনও বিহারের রাজনীতিতে একটি প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তিনি তার দল রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) সভাপতি।
লালু প্রসাদ যাদব একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তিনি তার ক্যারিজম্যাটিক ব্যক্তিত্ব এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার ক্ষমতা জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। তবে, দুর্নীতির অভিযোগের কারণে তার রাজনৈতিক কর্মজীবনও কলঙ্কিত হয়েছে। তবুও, তিনি বিহার রাজনীতিতে একটি প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে আজও সম্মানিত।