শুটারকন্যা দীপিকা কুমারী
দীপিকা কুমারী একজন ভারতীয় পেশাদার ধনুর্বিদ্যা খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে বিশ্বের সেরা মহিলা ধনুর্বিদদের মধ্যে একজন। দীপিকা কুমারী রাঁচি, ঝাড়খণ্ডে জন্মগ্রহণ করেন ১৩ জুন, ১৯৯৪ সালে। তিনি ভাতপিঠে চৌকিদারি করা বাবা শিবনাথ প্রসাদ ও গৃহবধূ গীতা মুন্ডার মেয়ে।
ধনুর্বিদ্যা কেরিয়ার
দীপিকা কুমারী ১২ বছর বয়সে ধনুর্বিদ্যা শুরু করেন টাটা আর্চারি একাডেমিতে। তিনি দ্রুতই ধনুর্বিদ্যায় দক্ষতা দেখিয়ে সতীর্থদের মধ্যে আলাদা হয়ে ওঠেন। ২০০৮ সালে, তিনি অনূর্ধ্ব-১৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। এরপর ২০১০ সালে, তিনি সিঙ্গাপুর যুব অলিম্পিক গেমসে স্বর্ণ পদক জিতেছিলেন।
২০১২ সালে, দীপিকা কুমারী লন্ডন অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তিনি মহিলাদের ব্যক্তিগত ইভেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছেছিলেন, যেখানে তিনি তৃতীয় স্থানে ছিলেন। ২০১৬ সালে, তিনি রিও অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, যেখানে তিনি মহিলাদের ব্যক্তিগত ইভেন্টের কোয়ার্টারফাইনালে পৌঁছেছিলেন।
পুরস্কার এবং সম্মাননা
দীপিকা কুমারীর ধনুর্বিদ্যায় অসামান্য অবদানের জন্য বেশ কয়েকটি পুরস্কার এবং সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি ২০১২ সালে অর্জুন পুরস্কার এবং ২০১৪ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি ২০১০ সালে মহিলাদের রিকার্ভ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন এবং ২০১২ সালে ওয়ার্ল্ড আর্চারি র্যাংকিংয়ে শীর্ষ স্থানে উঠেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
দীপিকা কুমারী একজন অত্যন্ত সহজ এবং মাটির মানুষ। তিনি তাঁর অসামান্য ধনুর্বিদ্যার দক্ষতার জন্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত হলেও তিনি সবসময়ই নিজের শিকড়ের সাথে যুক্ত থাকেন। তিনি তাঁর গ্রামের একটি ছোট্ট বাড়িতে বাস করেন এবং তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষা করেন।
সামাজিক দায়িত্ব
দীপিকা কুমারী সামাজিক দায়িত্বে বিশ্বাস করেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের সাথে জড়িত এবং তিনি মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেন। তিনি "শুট লাইক গার্ল" নামে একটি উদ্যোগ শুরু করেছেন, যা মেয়েদের ধনুর্বিদ্যা শেখাতে এবং তাদের ক্রীড়া ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে উৎসাহ দেয়।
অনুপ্রেরণা
দীপিকা কুমারী একজন অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব। তাঁর গল্প একটি সাধারণ মেয়েটির কাহিনী, যে দারিদ্র্য ও বিরূপ পরিস্থিতিকে অতিক্রম করে স্বপ্ন পূরণ করেছে। তাঁর অদম্যতা এবং দৃঢ় সংকল্প অনেককে অনুপ্রাণিত করেছে এবং তিনি ভারতের যুবসমাজের কাছে আদর্শ।
উত্তরাধিকার
দীপিকা কুমারী ভারতের ধনুর্বিদ্যার ইতিহাসে একজন কিংবদন্তী হিসাবে স্মরণ করা হবে। তাঁর অসামান্য অর্জন এবং সামাজিক দায়িত্বের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার তাঁকে ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে সফল এবং অনুপ্রেরণাদায়ী ক্রীড়াবিদদের একজন করে তুলেছে।