কালো মেঘের গর্জনের মাঝে, বর্ষণের আহ্বানে, অন্ধকার রাতে, হঠাৎ বাজ পড়লো আকাশে। বিদ্যুতের আলোয় সারা পৃথিবী মুহূর্তে আলোকিত হয়ে গেলো। আর সেই আলোর মধ্যে জন্মলেন শ্রীকৃষ্ণ।
জন্মাষ্টমী হলো পবিত্র উৎসব, যা শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন হিসাবে পালন করা হয়। তিনি ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর অবতার, যিনি ধর্মের রক্ষা এবং অসুরদের বিনাশের জন্য এসেছিলেন।
কৃষ্ণের জন্মের সাথে জড়িত অনেক কিংবদন্তি আছে। একটি কিংবদন্তি অনুসারে, কৃষ্ণের জন্মের সময় মথুরার কারাগারে বাস করছিলেন তার পিতা বাসুদেব এবং মা দেবকী। কিন্তু কংস নামক এক অসুর রাজা মথুরার সমস্ত নবজাতক শিশুদের হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন।
যখন কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করলেন, তখন ভগবান বিষ্ণু বাসুদেবকে কৃষ্ণকে গোকুলে বসবাসকারী নন্দ এবং যশোদার কাছে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। বাসুদেব তাই করলেন, এবং যমুনা নদী পার হওয়ার সময়, নদীর স্রোত এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠলো যে তারা প্রায় ডুবে গেলেন।
কিন্তু শেশনাগ নামে একটি বিশাল সাপ এসে তাদের মাথার উপর তার শিরশ্রেষ্ঠ ছাতা দিয়ে তাদের রক্ষা করলেন। যখন তারা গোকুলে পৌঁছালেন, তখন যশোদা নামে একজন গরুচারী নারীকে জন্ম দিয়েছিলেন একটি কন্যা সন্তান।
বাসুদেব নবজাত শিশুটিকে যশোদার কন্যার সাথে বদলে এনে নিজেদের সন্তানকে নিয়ে মথুরায় ফিরে গেলেন। যখন কংস শিশুটিকে হত্যা করতে গেলেন, তখন শিশুটি ঝাঁপিয়ে উঠলো এবং রাক্ষসী পুতনায় স্বরূপ প্রকাশ করলো।
কংস কৃষ্ণের জীবনব্যাপী তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কৃষ্ণ সবসময়ই তাঁর চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন। অবশেষে, কৃষ্ণ কংসকে হত্যা করেন এবং মথুরাকে অসুরদের অত্যাচার থেকে মুক্ত করেন।
এই অলৌকিক ঘটনাগুলি কৃষ্ণের অসাধারণতা এবং তাঁর দৈবিক প্রকৃতির প্রমাণ।
জন্মাষ্টমী একটি উৎসব, যেখানে আমরা ভগবান কৃষ্ণের জীবনী, তাঁর শিক্ষা এবং তাঁর অলৌকিক কাজগুলি স্মরণ করি। এটি ভালোবাসা, সাহস এবং বিশ্বাসের উৎসব।
এই পবিত্র দিনে, আসুন আমরা কৃষ্ণের আশীর্বাদ প্রার্থনা করি এবং তাঁর শিক্ষাগুলি আমাদের জীবনে অনুসরণ করার প্রতিজ্ঞা করি। শুভ জন্মাষ্টমী!