শহর যখন আবহাওয়ায় দাপটে উঠে




দিল্লি শহরের আবহাওয়া একটি অদ্ভুত পাখি। এটা এমন এক পাখি যা সবসময় বৈপরীত্য বয়ে আনে। কখনও তেজ রোদে শুকিয়ে যায় শহর আবার কখনও কালবৈশাখীতে ভিজে যায়, একবর্ষীদের মতো কখনও খুশি কখনও দুঃখী।
গ্রীষ্মের দাপট

দিল্লির গ্রীষ্ম কেবল গরম নয়, এটি একটি যন্ত্রণা। সূর্য তার পুরো শক্তি নিয়ে আঘাত হানে, রাস্তায় হেঁটে যাওয়া এমন হয় যেন অগ্নিপরীক্ষায় নামা। শহরের বাতাস অটল হয়ে যায়, একটি থমথমে কম্বলের মতো শরীরকে ঢেকে রাখে। ঘামের নদী বয়ে যায়, সব যেন একটা ভ্যাপসা সরস্বতী নদীতে পরিণত হয়।

কিন্তু এই গরমেরও একটি রোমান্টিক দিক রয়েছে। রাতের বেলা যখন শহর শান্ত হয়ে যায়, তখন আকাশ জুড়ে তারা ঝলমলে উঠে। পার্ক এবং ছাদগুলোতে মানুষরা জড়ো হয়, সরষের পাতার চাটনির সঙ্গে ঠান্ডা পানীয় উপভোগ করে। এমন একটা সময় যেন, যখন দিল্লি তার নিজস্ব অনন্য সৌন্দর্য দেখায়।

বর্ষার রোমাঞ্চ

দিল্লির বর্ষা হল একটি উত্সব। আকাশটা মেঘলা হয়ে কালো হয়ে ওঠে, বৃষ্টির ফোঁটাগুলো শুষ্ক মাটিকে জাগিয়ে তোলে। রাস্তাগুলো জলে টলমল করে, গাছগুলো নতুন সবুজ পাতায় সজ্জিত হয়। বর্ষার বৃষ্টিতে সব যেন ধুয়েমুছে নতুন হয়ে যায়।

তবে এই বৃষ্টিপাতের সঙ্গে কিছু বিরক্তিকর দিকও রয়েছে। জলজট হয়ে ওঠে সহ্যাতীত, রাস্তাগুলো হয়ে ওঠে বেহাল। কিন্তু এসব কিছুই দিল্লির বাসিন্দাদের বর্ষার রোমাঞ্চ উপভোগ করা থেকে বিরত রাখতে পারে না।

শীতের ঠান্ডা

দিল্লির শীতকাল হল একটি শান্তির সময়। তাপমাত্রা হু হু করে নেমে যায়, শহরটা যেন একটি সাদা চাদরে ঢেকে যায়। শহরের বাতাস হয়ে ওঠে শীতল এবং তীক্ষ্ণ।

শীতকালে দিল্লির সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা হল এর পার্কগুলো। এগুলো পিকনিক এবং আনন্দ করার জন্য আদর্শ স্থান। গরম কফি বা চায়ের কাপ নিয়ে কিছুক্ষণ পার্কে বসে থাকা শীতকালের রোদে খুবই আরামদায়ক।

যে আবহাওয়া শহরকে তৈরি করে

আবহাওয়া দিল্লি শহরের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শহরের চরিত্র এবং এর বাসিন্দাদের জীবনযাপনকে আকৃতি দেয়। গরম, বর্ষা এবং শীতের মিশ্রণটিই দিল্হি শহরকে করে তুলেছে সত্যিকারের স্বপ্নের শহর।