সেই রাধিকার কাছে এসেছিল কৃষ্ণ এই কথাটি কি সত্যি?




আমাদের ভারতবর্ষের প্রাচীন কাল থেকে সবথেকে মহৎ ও পবিত্র গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ভগবদ্গীতা। কিন্তু আজকে আমাদের জানার বিষয়টি হলো এই গীতার মূল অনুসারীদের সম্বন্ধে। অন্যথা ভাবে বললে, যার উদ্দেশ্যে এই গীতা গাওয়া হয়েছিল সেই সেই অর্জুনের বিষয়ে আমরা গল্প বলব।

ভগবদ্গীতার মূল কাহিনী

মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে, কৃষ্ণ অর্জুনের রথচালক ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, অর্জুন নিজের আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করতে অস্বীকার করেন। কারন তার চিন্তায় সবসময় ঘুরপাক খাচ্ছিল যদি সে যুদ্ধ করে তাহলে সে তার প্রিয়জনদের হারাবে। এমনকি যুদ্ধের মর্ত্যুকূপে পড়ে সে ভীষণ বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। তখন কৃষ্ণ অর্জুনকে শেখানো শুরু করে কি করে এই যুদ্ধকে সম্পূর্ণ বিবেকের সাথে করবে। সে কিভাবে তার কর্তব্যবোধকে সামনে রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সমস্ত কথাই ভগবদ্গীতার মূল বক্তব্য।

অর্জুন ছিলেন মূল শ্রোতা

ভগবদ্গীতার শ্লোকগুলো দেখলেই বোঝা যায় যে এই গীতার সবথেকে বড় শ্রোতা এবং পাঠক ছিলেন অর্জুন। গীতার শুরুতেই কৃষ্ণ বলছেন অর্জুন হে অর্জুন, এমনভাবে কথা বলো না। কেবল অর্জুনকে উদ্দেশ্য করে কৃষ্ণ তার জ্ঞানের বাক্স খুলে দিয়েছিলেন। কেবল অর্জুনের প্রশ্নের উত্তর দিতে কৃষ্ণ তাকে সব জ্ঞান দিয়েছেন।

কিভাবে অর্জুন রাধিকার কাছে পৌঁছেছিলেন?

কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন হতে পারে যে অর্জুন যেহেতু গীতা শোনার পাত্র ছিলেন তাহলে কৃষ্ণ কিভাবে বৃন্দাবনে পৌঁছেছিলেন, রাধিকার কাছে গিয়ে তাকে বৃন্দাবন ডেকে নিয়ে এসেছিলেন? সত্যি কথা বলতে গেলে এটি একটি অবিশ্বাস্য ঘটনা। কিন্তু শাস্ত্রে এবিষয়ে একটি কাহিনী আছে।

বলা হয় যখন শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবন ছাড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন তখন রাধিকা আর সহ্য করতে পারলেননা। তিনি কৃষ্ণের পিছু নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন কৃষ্ণ রাধিকাকে দেখে হেসে ফেললেন। কিন্তু রাধিকা কাদতে কাদতে বললেন, "প্রভু, তুমি হেসোনা। আমার বুকের ভিতর তো শুধু তোমার কথাই গিয়েছে। আমি শুধু তোমাকে নিয়েই ভাবি। আমার মন আর কোথায়ও নেই।"

তখন কৃষ্ণ রাধিকার কানের কাছে মুখ নিয়ে একটি মন্ত্র আদেশ করলেন। এই মন্ত্রের আদেশ খুবই গোপনীয়। এই গোপনীয় মন্ত্রের কারনেই এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে কোনো কিছু জানা যায়না। পরে যখন অর্জুন মূছিত অবস্থায় পড়েছিলেন, তখন কৃষ্ণ বারবার অর্জুনের কানের কাছে সেই গোপন মন্ত্রটি আদেশ করেছিলেন।

  • কারনেই অর্জুন মূছিত অবস্থা থেকে ঘুমিয়ে উঠেছিলেন এবং রাধিকার সামনে এসে গিয়েছিলেন।
  • বলা হয়, রাধা এবং অর্জুন একই দেবীর দুটি সত্তা। কিন্তু এটি একটি পুরাণ কাহিনী। এই বিষয়টি নিয়ে কোনো আদার মান্যতা পাওয়া যায়না।