সঞ্জীব গোয়েঙ্কা
আজ আমাদের দেশে সঞ্জীব গোয়েঙ্কা নামটি এক বিশাল শিল্প সাম্রাজ্যের প্রতীক। রিলায়েন্স, আদানি, টাটা-এর মতো শিল্প দানবদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চলেছে গোয়েঙ্কা গ্রুপ। কলকাতা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গোয়েঙ্কা গ্রুপের প্রধান কার্যালয়টিও দেখতে অভিভূতকর। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সজ্জিত ভবনের ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার বিশাল প্রতিকৃতি। কালো স্যুট এবং রঙিন টাই পরে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার চেহারায় এক অপ্রতিরোধ্য আত্মবিশ্বাস।
কিন্তু, কীভাবে একজন সাধারণ বালক ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতিদের কাতারে নিজের নাম লিখলেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আমাদের সঞ্জীব গোয়েঙ্কার জীবনের পাতা ঘুরতে হবে।
রাজস্থানের একটি মারোয়াড়ি পরিবারে জন্মগ্রহণ করা সঞ্জীব গোয়েঙ্কা ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। কলকাতায় গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন একটি বহুজাতিক সংস্থায়। কিন্তু, কিছুদিন পরই তিনি নিজের ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। একটি ছোট্ট অফিস তৈরি করে তিনি শুরু করেন কয়লা ব্যবসা।
সঞ্জীব গোয়েঙ্কার ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয় কয়লা ব্যবসা দিয়ে। কিন্তু, কয়লা ব্যবসায় তেমন লাভ হচ্ছিল না। এরপর তিনি হাত দেন প্লাস্টিকের ব্যবসায়। আর এই প্লাস্টিকের ব্যবসাই তাকে বড় ব্যবসায়ী বানিয়ে তোলে। প্লাস্টিকের ব্যবসার পাশাপাশি তিনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতেও হাত দেন।
আজ গোয়েঙ্কা গ্রুপের অধীনে রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় সংস্থা। এদের মধ্যে রয়েছে স্পেন্সারস রিটেইল, সন টিভি, লখনউ সুপার জায়ান্টস, রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টস ইত্যাদি। সঞ্জীব গোয়েঙ্কার ব্যবসায়িক কৌশলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো তিনি ছোট ব্যবসাগুলোকেও গুরুত্ব দেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ছোট ব্যবসাগুলোই অর্থনীতির মেরুদণ্ড।
সঞ্জীব গোয়েঙ্কা একজন সফল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি একজন দানশীল ব্যক্তিও। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ক্রীড়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে অবদান রেখে চলেছেন। তিনি গোয়েঙ্কা স্কুল অফ বিজনেস অ্যান্ড রিসার্চ নামে একটি ব্যবসায়িক স্কুলও স্থাপন করেছেন।
সঞ্জীব গোয়েঙ্কা আজ ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী। তার সাফল্যের গল্প আমাদের প্রত্যেককেই অনুপ্রাণিত করে। তার জীবনী থেকে আমরা শিখতে পারি যে, অধ্যবসায় এবং সঠিক দিকনির্দেশ থাকলে যে কেউই সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছতে পারেন।