সীতা নবমী ২০২৪




পবিত্র হিন্দু উৎসব সীতা নবমী ২০১২ সালের ২৪ মার্চ, শুক্রবার পালিত হবে।
সীতা নবমী হল হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা ভগবান রামের সহধর্মিণী সীতার জন্মদিনের স্মরণে পালিত হয়। এই দিনটি সাধারণত চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে পালিত হয়।

সীতা নবমীর উপকথা

লঙ্কানেশ্বর রাবণের সাথে যুদ্ধ করতে লক্ষ্মণের সাথে অযোধ্যার রাজা রাম চৌদ্দ বছরের জন্য বনবাসে গেছেন। মিথিলা রাজ্যের রাজা জনকের কন্যা সীতা তার স্বামী রামের সাথে এ সময় বনে গেছেন। রাম, লক্ষণ ও সীতা তিনজনে তাঁবু টাঙ্গিয়ে বনের একটি নির্জন স্থানে থাকতেন।
একদিন সীতা তাঁবুর কাছে বিশ্রাম করছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখলেন তাঁর সামনে সোনার চেয়েও উজ্জ্বল এক তরুণ যুবক দাঁড়িয়ে আছেন। যুবকটি সীতাকে বনে ঘুরতে যেতে বলেন। সীতা জানতেন না যে সে ছিল অশোকবন থেকে সীতাকে হরণ করার জন্য রাবণের ভাই রাক্ষস মারীচ।
সীতার অনুমতি না নিয়ে মারীচ সুবর্ণ মৃগের ছদ্মবেশে রামের তাঁবুর কাছ দিয়ে দৌড়ে যায়। সীতাকে খুবই পছন্দ হয় হরিণটি। তিনি রামকে বললেন যে তিনি তাকে বশ করতে চান। রাম মারীচকে ধরতে বনবাসে গেলেন এবং সীতাকে লক্ষ্মণের সাথে একা রেখে গেলেন।
যখন সীতা দেখলেন যে রাম অনেকক্ষণ ফিরে আসছে না, তখন তিনি লক্ষ্মণকে তার সন্ধানে যাওয়ার অনুরোধ করলেন। কিন্তু লক্ষ্মণ সীতাকে একা রাখতে চায়নি। সীতা তাকে রামের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন, তখন লক্ষ্মণ রামকে খুঁজতে বনে গেলেন।
তখন রামের ছদ্মবেশে রাবণ সীতার সামনে এসেছিলেন। সীতা তখনও বুঝতে পারেননি যে সে রাম নন। রাবণ সীতাকে বললেন যে তিনি রাম এবং তাকে অযোধ্যায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। সীতা রাবণের সাথে গেলেন, কারণ তিনি ভেবেছিলেন যে তিনি তার স্বামী রাম।
রাবণ সীতাকে লঙ্কার অশোক বনে নিয়ে গেলেন। সেখানে সীতা তাঁকে বলেছিলেন যে সে তার স্ত্রী হতে পারে না কারণ তার স্বামী রাম। রাবণ তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সীতা অবিচলিত ছিলেন।

সীতা নবমী উদযাপন

সীতা নবমী দিনে, ভক্তরা ভক্তিমূলক গান গাওয়া এবং সীতা দেবীর পুজোয় অংশ গ্রহণ করেন। সীতার মূর্তিকে নতুন বস্ত্র পরিয়ে ফুল এবং প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয়। ভক্তরা সীতা আরতি করে এবং তার কাছে প্রার্থনা করে।
কিছু স্থানে, ভক্তরা সীতা স্বয়ম্বরের নাটকও করেন। এই নাটকটি সীতা এবং রামের বিয়ের গল্প বলে। নাটকটি রামচরিতমানসের পাঠোদ্ধারের সাথে শুরু হয়।

সীতা নবমীর তাৎপর্য

সীতা নবমী শুধুমাত্র সীতার জন্মদিনই নয়, এটি ভালো এবং মন্দের সংগ্রামেরও প্রতীক। সীতা হলেন শুদ্ধতা ও উদারতার প্রতীক, যখন রাবণ হলেন মন্দতা ও অহংকারের প্রতীক। সীতা নবমী আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে ভালো সবসময় মন্দকে পরাজিত করে।

সীতা নবমী উপলক্ষে কিছু স্তোত্র

  • জয় জয় রঘুনাথ ভগবান মেরি
  • সীয়া রাম চন্দ্র কি জয়
  • মেরে ভোল না যায় রাম

সীতা নবমীর শুভেচ্ছা

সবাইকে সীতা নবমীর শুভেচ্ছা। এই পবিত্র উৎসবে, আসুন আমরা সীতার শুদ্ধতা, উদারতা এবং ভক্তির কথা স্মরণ করি। আসুন আমরা তার চরণের কাছে প্রার্থনা করি যাতে তিনি আমাদের জীবনে আধ্যাত্মিকতা ও সুখ নিয়ে আসেন।
জয় সীয়ারাম