রাজা সালমানের জন্ম ১৯৩৫ সালে রিয়াদে। তিনি রাজা আবদুল আজিজ আল-সৌদ, সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতার পুত্র। তিনি দেশের প্রশাসন ও রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী শিক্ষা লাভ করেছেন এবং ১৯৬৩ সালে রিয়াদের গভর্নর নিযুক্ত হন। এই পদে তিনি দেশের রাজধানীকে আধুনিকীকরণ ও উন্নয়নে অবদান রাখেন।
রাজা আবদুল্লাহর রাজত্বকালে রাজা সালমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই পদ থেকে তিনি সৌদি সশস্ত্র বাহিনীকে বিশ্বের একটি উল্লেখযোগ্য শক্তিতে পরিণত করতে কাজ করেন। তিনি উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক জোট গঠনেও ভূমিকা রেখেছেন।
২০১৫ সালে রাজা আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর রাজা সালমান সৌদি আরবের রাজা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রাজত্বকালে তিনি সৌদি আরবকে আধুনিকীকরণ ও অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণের দিকে নিয়ে গেছেন। তিনি সৌদি ভিশন ২০৩০ লঞ্চ করেছেন, যা দেশের তেল-নির্ভর অর্থনীতিকে অবসান ঘটানো এবং নতুন শিল্পে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা।
রাজা সালমান সামাজিক সংস্কারের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন এবং মহিলাদের অধিকার সম্প্রসারণ এবং সৌদি সমাজে নারীর ভূমিকাকে শক্তিশালী করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অবকাঠামো উন্নয়নেও বিনিয়োগ করেছেন।
রাজা সালমান বিশ্ব মঞ্চে সৌদি আরবের একটি শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রচারে অবদান রেখেছেন।
রাজা সালমান মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গিবাদের এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেছেন এবং সিরিয়া এবং ইয়েমেনে যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজা সালমান একটি শক্তিশালী এবং সম্মানিত নেতা হিসাবে সৌদি আরবের ইতিহাসে একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে যাবেন। তিনি একটি দেশের আধুনিকীকরণ এবং অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিচিত, যা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী দেশগুলির মধ্যে একটিতে পরিণত হয়েছে।
রাজা সালমানের উত্তরাধিকার কেবল তাঁর দেশে তাঁর কাজই নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর প্রভাব এবং তাঁর আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত হবে। তিনি একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং অনুপ্রেরণাদায়ী শাসনকাল রেখে যাচ্ছেন যা আগামী বছরগুলিতেও সৌদি আরবকে আকৃতি দিতে থাকবে।