ফুটবলের মাঠে কীভাবে একজন যুবক তার দেশকে উচ্চতায় নিয়ে গেল, সেই গল্প হল সুনীল ছেত্রীর গল্প। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ফুটবলার হিসাবে পরিচিত, ছেত্রী তাঁর দক্ষতা, দৃঢ় সংকল্প এবং দেশের প্রতি ভালবাসার জন্য প্রশংসিত।
১৯৮৪ সালের ৩রা আগস্ট সিকিমের গ্যাংটকে জন্মগ্রহণ করেন সুনীল ছেত্রী। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি তাঁর প্রবল অনুরাগ ছিল। তিনি রাস্তায় এবং স্থানীয় মাঠে খেলা শুরু করেন, এবং ধীরে ধীরে তাঁর দক্ষতা স্পষ্ট হতে শুরু করে।
১৯৯৭ সালে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে, ছেত্রী মোহন বাগান একাডেমিতে যোগ দেন। সেখানে তিনি তার দক্ষতা উন্নত করেন এবং ভারতের অনূর্ধ্ব-১৭ দলে ডাক পান। ২০০২ সালে, তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে ভারতীয় জাতীয় দলে আত্মপ্রকাশ করেন, যা ভারতীয় ফুটবলে একটি মাইলফলক ছিল।
জাতীয় দলের সাথে ছেত্রীর যাত্রা দুর্দান্ত সফলতার দ্বারা চিহ্নিত। তিনি এখন পর্যন্ত 129 টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এবং একটি রেকর্ড 84 টি গোল করেছেন। তিনি ভারতকে অনেকগুলি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে এএফসি এশিয়ান কাপ এবং এএফসি সলিডারিটি কাপের খেতাব।
আন্তর্জাতিক স্তরে সফলতার পাশাপাশি ছেত্রী ক্লাব ফুটবলেও একটি সফল কর্মজীবন গড়ে তুলেছেন। তিনি মোহন বাগান, ইস্টবেঙ্গল, বেঙ্গালুরু এবং এটিকে মোহন বাগান সহ ভারতের শীর্ষ ফুটবল ক্লাবগুলির জন্য খেলেছেন। তিনি আই-লিগ এবং সুপার কাপের মতো অনেকগুলি ঘরোয়া শিরোপা জিতেছেন।
সুনীল ছেত্রী শুধুমাত্র তার খেলা দক্ষতার জন্যই নয়, তার নেতৃত্ব গুণের জন্যও পরিচিত। তিনি দলের সতীর্থদেরকে অনুপ্রাণিত করেন এবং চ্যালেঞ্জের মুখে তাদের উত্সাহিত করেন। তিনি যুব ফুটবলারদের জন্য একটি রোল মডেল, যারা তাকে তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসাবে দেখে।
সুনীল ছেত্রীর অসামান্য অবদানের জন্য তাকে অনেকগুলি পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। তিনি পদ্মশ্রী সহ সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মান পেয়েছেন এবং এএফসি এশিয়ান আইকন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
সুনীল ছেত্রী ভারতীয় ফুটবলের একজন জীবন্ত কিংবদন্তী। তাঁর দক্ষতা, দৃঢ় সংকল্প এবং দেশপ্রেম তাকে ভারতীয় ক্রীড়াজগতে একটি অনন্য ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে। তাঁর গল্প ভারতীয় যুবক-যুবতীদের স্বপ্ন দেখার এবং তাদের লক্ষ্য অর্জনে কঠোর পরিশ্রম করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।