সনি, পায়ের নিচের মাটি হারাচ্ছে কী?
সময়েরো সাথে প্রযুক্তির অগ্রগতি বেড়েছে, আর এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকাটা একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জের মুখেই দাঁড়িয়ে আছে জাপানি ইলেকট্রনিক্সের জায়ান্ট সনি কর্পোরেশন। এক সময়ের বিশ্বের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স কোম্পানিটি এখন হিমশিম খাচ্ছে টিকে থাকতে। স্যামসাং, এলজি এবং অ্যাপলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীরা এই কোম্পানিকে যেন পেছনে ফেলে দিয়ে যাচ্ছে।
সনির পতনের কারণ অনেক। এর মধ্যে একটি হলো স্মার্টফোন বাজারে কোম্পানির ব্যর্থতা। স্যামসাং এবং অ্যাপলের মতো নির্মাতারা যখন তাদের স্মার্টফোনগুলির সঙ্গে ইনোভেশন এবং উচ্চমানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল, তখন সনি এই অঙ্গনে অনেকটা পিছিয়ে পড়ে। কোম্পানির Xperia স্মার্টফোনগুলি মূলত হাই-এন্ড বাজারকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু সেই বাজারে স্যামসাং এবং অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
সনির পতনের আরেকটি কারণ হলো গেমিং কনসোলের বাজারে তারা প্রভাব কমে যাওয়া। এক সময় প্লেস্টেশন কনসোলগুলি বাজারে রাজত্ব করতো, কিন্তু এখন এক্সবক্স এবং নিন্টেন্ডোর কনসোলগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সনি অনেক পিছিয়ে পড়েছে। সনি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের দিকে অতটা মনোনিবেশ করেনি যেটুকু তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা করেছে, এবং ফলস্বরূপ তারা বাজারে অংশ হারাচ্ছে।
সনি এখন অস্তিত্বের সংকটের মুখোমুখি। কোম্পানির আয় কমছে এবং তারা বাজারে অংশ হারাচ্ছে। যদি সনি আগামী দিনে টিকে থাকতে চায়, তাহলে তাদের ব্যবসায়িক কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং তাদের পণ্য এবং পরিষেবাগুলি যাতে গ্রাহকদের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
যদিও সনির সামনে বড়ো চ্যালেঞ্জ রয়েছে, কিন্তু কোম্পানির কাছে এখনও সফল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সনি ক্যামেরা, অডিও এবং গেমিংয়ের মতো কিছু ক্ষেত্রে এখনও শক্তিশালী। যদি তারা এই দিকগুলির উপর মনোনিবেশ করতে পারে এবং তাদের পণ্য ও পরিষেবাগুলি উদ্ভাবন করতে পারে, তাহলে তারা আবারও ইলেকট্রনিক্স শিল্পে শীর্ষে ফিরে আসতে পারে।
সনির কাহিনী আমাদের প্রযুক্তি শিল্পের ক্রমাগত পরিবর্তনশীল প্রকৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। এমনকি সবচেয়ে সফল কোম্পানিগুলিরও নিজেদেরকে অ্যাডাপ্ট করতে হয় এবং বাজারে টিকে থাকার জন্য নতুন করে আবিষ্কার করতে হয়। সনি যদি এটি করতে না পারে, তাহলে তারা ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে যাবে এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্প থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।