সাবিত্রী ঠাকুর ছিলেন একজন ভারতীয় ধর্মগুরু এবং দর্শন। তিনি হিন্দু দেবী কালীর একজন ভক্ত ছিলেন এবং তার শিক্ষাগুলি অদ্বৈতবাদে মূলতঃ প্রতিষ্ঠিত ছিল। তিনি ভারতে নারী পুরুষ সমান অধিকারের একজন অগ্রণী সমর্থক ছিলেন এবং নারীদের শিক্ষা ও মুক্তির জন্য তাঁর কাজের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।
১৯ শতকের মধ্যভাগে হুগলী জেলার জোড়াবাসান গ্রামে সাবিত্রী ঠাকুরের জন্ম হয়েছিল। তিনি একটি ধার্মিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং অল্প বয়স থেকেই মনপুরাণ পড়াশোনাতে আগ্রহী ছিলেন। তিনি খুব স্বাধীনচেতা ছিলেন এবং তাঁর সময়ের অন্যান্য মেয়েদের মতোই ঘরের কাজকর্ম করতে অপছন্দ করতেন।
একবার, যখন তিনি কৈশোরে ছিলেন, তখন তিনি মহাশ্বেতা দেবীর একটি ছবি দেখলেন। সেই ছবিটি তাঁকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে, তিনি দেবীর একজন ভক্ত হয়ে ওঠার সংকল্প করলেন। তিনি কঠোর সাধনা এবং তপস্যা শুরু করলেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই তার আধ্যাত্মিক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেল।
মহাশ্বেতা দেবীর ভক্ত হিসেবে সাবিত্রী ঠাকুরের খ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে লাগল। মানুষ তাঁর আশীর্বাদ এবং উপদেশের জন্য তাঁর কাছে আসতে শুরু করল। তিনি তাদের হিন্দু ধর্মের গোপন তত্ত্ব এবং নারী ও পুরুষ সমানতার প্রকৃতি সম্পর্কে শিক্ষা দিতেন।
সাবিত্রী ঠাকুর তাঁর শিক্ষার জন্য বিখ্যাত ছিলেন যা অদ্বৈতবাদ ভিত্তিক ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, সমস্ত জীবন্ত জিনিসই এক এবং একমাত্র বাস্তবতা হল ব্রহ্ম। তিনি শিক্ষা দিতেন যে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমাদের এই অদ্বৈত বোধ বজায় রাখা উচিত এবং আমরা সকলেই প্রেম, সহানুভূতি এবং করুণায় পরস্পরের সাথে আচরণ করা উচিত।
সাবিত্রী ঠাকুর ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য নারী অধিকার কর্মী। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, নারী ও পুরুষ সমান এবং নারীদের শিক্ষা এবং স্বাধীনতা থাকার অধিকার রয়েছে। তিনি বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন এবং নারীদের পুনর্বিবাহের অধিকারের জন্য অভিযান চালিয়েছিলেন।
সাবিত্রী ঠাকুর ১৯২০ সালে মারা যান। তবে তাঁর শিক্ষা এবং তাঁর কাজ আজও সারা ভারতে ভক্তদের দ্বারা স্মরণ করা হয় এবং অনুসরণ করা হয়। তিনি ভারতের একটি অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর অবদান দেশের সামাজিক, ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক উন্নতিতে একটি স্থায়ী ছাপ রেখেছে।