সুরুণ্ড: একসময়ের আবহমান আজ কি কেবল স্মৃতি?




গত শতাব্দীর একসময় "সুরুণ্ড" নামক এক আবহমান ঢাকা শহরে ছিল, আজ যা কেবল স্মৃতি হয়ে অবশিষ্ট।

ঢাকার শেকড় অনেক গভীরে, ইতিহাসের পাতায় লেখা প্রাচীন রাজধানীর গল্প। জাঁকজমক, সাংস্কৃতিক উৎসব আর সেই সাথে কিছু বিশেষ আবহমানও এই শহরের স্বকীয়তা বহন করে।

এমনি এক আবহমান ছিল "সুরুণ্ড"। সেই সময়ের ঢাকার চিত্র যেন আজও আমাদের চোখে ভাসে - বর্ষা মৌসুমে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় জমে থাকা পানিতে নৌকা চলাচল করত। শিশুরা পানির স্রোতের সাথে নৌকাকে ঘুরিয়ে বেড়িয়ে আনন্দ উপভোগ করত, আর বড়রা তাদের এসব কান্ডকারখানা দেখে হাসতেন।

কিন্তু আজ আর সেই সুরুণ্ডের দেখা নেই। শহরের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের ধারায় সুরুণ্ড হারিয়ে গেছে। আধুনিক ভবন, সড়ক এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন সুরুণ্ডের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

সুরুণ্ডের অবসান আমাদের জন্য একটা ক্ষতিই বটে। এটি শুধুমাত্র একটি আবহমান ছিল তা নয়, এটি ছিল একটি ঐতিহ্য, একটি সংস্কৃতি। এটি আনন্দের উৎস ছিল, আমাদের বিনোদনের একটি মাধ্যম ছিল।

যদিও সুরুণ্ড আর নেই, কিন্তু এর স্মৃতি আমাদের কাছে আজও অমর। যখন আমরা ঢাকার সেই দিনগুলোর কথা ভাবি, তখন আমাদের মনে পড়ে এই জলের উৎসবের কথা। এটি আমাদের স্মৃতিতে একটি মিষ্টি স্মারক হিসেবে রয়ে যাবে, যা আমরা আমাদের আগামী প্রজন্মের কাছে শোনাব।

আজ আমরা আর সুরুণ্ডের সেই রোমাঞ্চ উপভোগ করতে না পারলেও, আমরা এর স্মৃতিগুলোকে মনে রাখতে পারি। আমরা আমাদের শিশুদেরকে ঢাকার এই বিশেষ আবহমানের কাহিনি বলতে পারি, যাতে তারা জানতে পারে আমাদের শহরের একসময়ের রীতিনীতি এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে।

শহুরে উন্নয়ন নিঃসন্দেহে আমাদের জীবনকে আরও সহজ করেছে, কিন্তু এর সাথে সাথে এটি আমাদের থেকে অনেক কিছু কেড়েও নিয়েছে। সুরুণ্ড হলো সেইসব হারানো সম্পদের মধ্যে একটি, যা কেবল আমাদের স্মৃতিতে জীবিত।

আমরা আশা করি, भবিष्यতে আমাদের শহর সুরুণ্ডের মতো আরও সমৃদ্ধ এবং স্মরণীয় আবহমান তৈরি করতে পারবে যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি চিরস্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে।