সোরেনড - শুধুমাত্র পোশাকে এখন নয়, চোখেও!
সোরেনড শব্দটির সঙ্গে আমাদের পরিচয় বেশিদিনের নয়। এই শব্দটা প্রথম শোনা গেছে মাত্র ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে এবং এই শব্দটির আবির্ভাবের পেছনে আছে এক ভয়ানক ঘটনা। ২০২০ সালে যখন কোভিড-১৯ পুরো বিশ্বকে থমকে দেয়, তখনও ভারত এই মহামারীর কবল থেকে মুক্ত। কিন্তু সেই সময়ই দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগি জামাতের এক সমাবেশে ২০০০ এরও বেশি মানুষের জড়ো হওয়ার ফলে সারা ভারতে কোভিড-১৯ মহামারী ভয়াবহ ব্যাপকতা নেয়। আর এই ঘটনারই ফলশ্রুতিতে দেশে ছড়িয়ে পড়ে সোরেনড রোগ।
তবে সোরেনড কী, সেটা বোঝার আগে আমাদের জানতে হবে কিভাবে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়ায়। কোভিড-১৯ রোগটি এক ধরণের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ যা সার্স-কোভি-২ নামে একটি ভাইরাসের কারণে হয়। এই ভাইরাসটি কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে বাতাসে মুক্ত হওয়া ছোট ছোট ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। এই ড্রপলেটগুলি স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির মুখ, নাক বা চোখে পড়ে তাদের সংক্রমিত করে। দীর্ঘক্ষণ ধরে বন্ধ জায়গায় অবস্থান করলে এই ভাইরাসটি ছড়ানোর সর্বাধিক সম্ভাবনা থাকে।
যেহেতু সোরেনড শব্দটি কোভিড-১৯ এর সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই এই রোগের লক্ষণও প্রায় একই। যেহেতু কোভিড-১৯ এর মাধ্যমে এই রোগের সূত্রপাত, তাই এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি হচ্ছে জ্বর, শুষ্ক কাশি এবং শ্বাসকষ্ট। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই রোগের লক্ষণগুলিতে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। এখন সোরেনড রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের অন্যান্য কিছু লক্ষণও দেখা দিচ্ছে, যেমন- নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথা, গন্ধ এবং স্বাদের অনুভূতি না থাকা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা।
সোরেনড রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এই রোগের চিকিৎসার জন্যও যেহেতু কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত পদ্ধতিই অনুসরণ করা হচ্ছে, তাই এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। এছাড়াও, এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন- জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।
এই রোগটি নিয়ে এখনও অনেক রহস্য অবশিষ্ট। কোনও ব্যক্তি এই রোগে কত দিন ভুগবে, এই রোগের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হতে পারে, এইসব বিষয়ে এখনও গবেষণা চলছে। এই গবেষণাগুলি সম্পন্ন হওয়ার পরেই আমরা এই রোগ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারব।