সেহওয়াগ স্যারের অজানা কথাগুলো




আমি বিশ্বাস করি না এমন কেউ আছে যে ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাস জানে এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের সবচেয়ে বিচক্ষণ ও প্রাণবন্ত খেলোয়াড় বীরেন্দ্র শেহওয়াগকে জানে না। তার ভক্তদের মনে তিনি সবসময়ই একজন বীর। এই ক্রিকেটারের প্রচুর অনুগামী এবং সমর্থক আছেন। ভারতের অন্যতম সফল ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন হিসাবে তাকে স্বীকৃত। তিনি তিনটি দ্বি-শতক সহ ২৩ টি শতক এবং ৩৫ টি অর্ধ-শতক নিয়ে তার টেস্ট কেরিয়ার শেষ করেছেন। তিনি ওয়ানডেতে ১৫ টি শতক এবং ৩৮ টি অর্ধ-শতক এবং টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে ৪ টি অর্ধ-শতক সহ ১৮৭৪ রান নিয়ে তার কেরিয়ার শেষ করেছেন।
তিনি কয়েকবার ম্যাচ জিতেছেন ভারতীয় দলের জন্য, শেহওয়াগ টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান। তিনি ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি অফ-ব্রেক বোলার। তিনি তার টেস্ট কেরিয়ারের শুরুতে তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন, পরে তিনি একটি আরও স্থায়ী ব্যাটসম্যান হিসাবে পরিণত হন। তিনি একটি দুর্দান্ত ফিল্ডারও ছিলেন যিনি প্রায়শই স্লিপে দাঁড়িয়েছিলেন।
শেহওয়াগ ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ঝজ্জর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা অরিহন্ত স্কুল, ঝজ্জরে এবং এরপর সেন্ট মার্কস সিনিয়র সেকেন্ডারি পাবলিক স্কুল, মুরথালে পান। তিনি ছেলেবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসতেন এবং তিনি প্রায়শই তার স্কুল এবং কলেজের দলের হয়ে খেলতেন।
১৯৯৯ সালে শেহওয়াগ তার আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শুরু করেন। তিনি তার টেস্ট অভিষেক পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং তার ওয়ানডে অভিষেক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেন। শেহওয়াগ তখন থেকেই ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে ওঠেন এবং তিনি দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যানদের একজন হয়ে ওঠেন। তিনি ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন এবং তিনি ২০০৭ সালে আইসিসি টেস্ট প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ারের পুরস্কারও জিতেছিলেন।
শেহওয়াগ ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তিনি তখন থেকেই কमेंटেটর এবং বিশ্লেষক হিসাবে কাজ করছেন। এটি অবাক করা বিষয় নয় যে "নবাব অফ নজফগড়" নামে পরিচিত এই ক্রিকেট তারকার জীবনের অনেক কাহিনী রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু শুনুন:
* একবার শেহওয়াগ একজন ভক্তের কাছ থেকে একটি ফোন পান যিনি একটি অটোগ্রাফ চেয়েছিলেন। শেহওয়াগ কেন্দ্রীয় লন্ডনের একটি পাবের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শেহওয়াগ ফোনটি তুলে নেন এবং বলেছিলেন, "এটি অন্য সময় হতে পারে! আমি এখন ব্যস্ত আছি"। কিছুক্ষণ পরে, দুজন পুলিশ অফিসার পাবের বাইরে এসে শেহওয়াগকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন যে সে কি কারও সাথে ঝগড়া করছে। শেহওয়াগ পুলিশ অফিসারদের বললেন যে তিনি সেই ব্যক্তির সাথে ঝগড়া করছেন যিনি তাকে ফোন করেছিলেন। পুলিশ অফিসাররা ভক্তকে খুঁজে বের করে এবং তাকে ফোন ডিসকানেক্ট করতে বলেন।
* একবার শেহওয়াগ ক্রিকেটে তার পাগলামির জন্য পরিচিত ছিলেন। একবার তিনি একটি ম্যাচের সময় একটি সিক্স মারার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু বলটির বাউন্ডারি ছাড়িয়ে যেত। বলটি মাঠের বাইরে গিয়ে একজন দর্শকের মাথায় লাগে। দর্শকটি একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল এবং শেহওয়াগ তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। শেহওয়াগ দর্শককে বলেছিলেন, "আপনি ঠিক আছেন তো? আমি কি আপনাকে বলটি স্বাক্ষরিত করে দেবো?"
* একবার একটি ক্রিকেট ম্যাচের সময় শেহওয়াগকে আউট করা হয়েছিল। তিনি প্যাভিলিয়ন ফিরে যাওয়ার সময় একজন ভক্ত তাকে একটি অটোগ্রাফ দিতে বলেছিল। শেহওয়াগ ভক্তকে বললেন, "না, আমি এখন ব্যস্ত আছি"। ভক্তটি শেহওয়াগকে ফিরে যেতে বলবেন না। শেহওয়াগ এগিয়ে গেলেন এবং বলটি সাইন করে দিলেন।
* ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় শেহওয়াগ একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "আমাদের জয়ের দাবিদারদের মধ্যে কেউ নেই"। এই বক্তব্যের কারণে অনেক সমালোচনা হয়েছিল, কিন্তু ভারত শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জিতেছিল।
* একবার একজন ভক্ত শেহওয়াগকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "আপনার ব্যাটিংয়ের গোপন রহস্যটা কি?" শেহওয়াগ জবাব দিয়েছিলেন, "আলু পরোটা"।
শেহওয়াগ হলেন একজন মজাদার এবং মজাদার ব্যক্তি। তিনি ক্রিকেট জগতে একজন কিংবদন্তি এবং তাকে ভারতের সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন হিসাবে স্মরণ করা হবে।