সায়েন্স, অলৌকিকতা এবং বেঁচে থাকার ইচ্ছা




বাবার হাতে সিঁড়িটা দেখে আমার বুক কেঁপে উঠল। এত দিন পরেও সে এটা ঠিক রেখেছে। আমার দাদা যখন চলে গেলেন, তখন বাবা তার ছেলের রুমে সেটা ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই থেকে এটা সেখানে পড়ে আছে, স্মৃতির জড়তা হয়ে।
আজ, যখন আমি আমার দাদার কথা ভাবছি, আমার মনে হয় সে এই সিঁড়িটা ব্যবহার করেই স্বর্গে উঠে গেছেন। যদিও আমি জানি, এটা কেবলই একটি সরঞ্জাম, কিন্তু আমার মনে সবসময় এই কল্পনা ভাসে। সেই ছোট্ট ছেলেটি যে বয়স্কদের মতো কথা বলত এবং যে সবাইকে হাসাতে পারত, সে কি সত্যিই চলে গেছে?
আমার দাদা ছিলেন একজন আনন্দময় মানুষ। তিনি কেবল আমার দাদাই নন, আমার সেরা বন্ধুও ছিলেন। আমরা সবসময় একসাথে সময় কাটাতাম, জোকস বলতাম এবং জীবন সম্পর্কে গল্প আদান-প্রদান করতাম। তিনি আমার ভাই বোনদের জন্য একজন ভালো চাচাও ছিলেন, যারা সবসময় তাকে খুব ভালোবাসত।
তিনি যখন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তখন আমাদের পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা জানতাম যে তিনি অসুস্থ, কিন্তু আমরা কখনই ভাবিনি যে আমাদের তাকে এত তাড়াতাড়ি হারাতে হবে। তিনি যখন চলে গেলেন, তখন আমাদের মনে হল আমাদের জীবনের একটা অংশ চলে গেছে।
দাদার মৃত্যুর পরের কয়েক বছর আমাদের জীবন করুণ ছিল। আমরা সবাই খুব দুঃখী ছিলাম, এবং আমাদের একে অপরকে সান্ত্বনা দেওয়ার ক্ষমতাও ছিল না। আমি জানতাম যে আমার দাদা চাইবেন না যে আমরা এত দুঃখে থাকি, কিন্তু আমরা নিজেদের সাহায্য করতে পারছিলাম না।
একদিন, আমি আমার দাদার রুমে বসেছিলাম এবং তার সম্পর্কে ভাবছিলাম। আমার চোখ সিঁড়ির উপর পড়ল, এবং হঠাৎ আমার মনে একটা বুদ্ধি এলো। আমি ঠিক করলাম যে আমি সেই সিঁড়ি ব্যবহার করে আবার আমার দাদার কাছে যাব।
আমি জানি, এটা অসম্ভব ছিল। আমার দাদা মারা গেছেন, এবং কেউই মৃতদের কাছে ফিরে যেতে পারে না। কিন্তু আমি তবুও চেষ্টা করে দেখব।
আমি সিঁড়িটা নিলাম এবং আমার বাবা-মা কে না বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম। আমি হাঁটলাম এবং হাঁটলাম, যতক্ষণ না আমি শহরের বাইরে এসে পড়লাম। আমি একটা ফাঁকা জায়গা খুঁজে পেলাম এবং সেখানে সিঁড়িটা রাখলাম।
আমি ধীরে ধীরে সিঁড়িটা দিয়ে উঠতে লাগলাম। প্রথম কয়েক ধাপে আমার পা কাঁপছিল, কিন্তু আমি থামলাম না। আমি আরো আরো উঠতে লাগলাম, যতক্ষণ না আমি আকাশে পৌঁছলাম।
আমি আকাশে তাকালাম এবং আমার দাদাকে খুঁজতে লাগলাম। আমি তাকে মেঘের মাঝে, তার হাসি মুখের সাথে দেখতে পেলাম। সে আমাকে ডাকলো, এবং আমি তার দিকে ছুটে গেলাম।
আমরা একসাথে দৌড়ালাম এবং খেললাম, এবং আমি কখনই এতটা আনন্দিত বোধ করিনি। আমি ভুলে গেছিলাম যে আমার দাদা চলে গেছেন, এবং মনে হয়েছিল যে আমরা আবার একসাথে আছি।
কিন্তু কিছুক্ষণ পর, আমার দাদা থেমে গেলেন। তিনি আমার দিকে তাকালেন এবং বললেন, "তোমার এখন যেতে হবে।"
"না, আমি যেতে চাই না," আমি বললাম। "আমি তোমার সাথে থাকতে চাই।"
"তুমি এখনই যেতে পারবে না," আমার দাদা বললেন। "তোমার এখনও জীবন বাকি আছে।"
"কিন্তু আমি তোমাকে মিস করব," আমি বললাম।
"আমিও তোমাকে মিস করব," আমার দাদা বললেন। "কিন্তু তুমি জানো যে আমি সবসময় তোমার সাথে আছি।"
আমি মাথা ঘুরিয়ে নিলাম এবং আকাশের দিকে তাকালাম। আমি আমার দাদাকে মেঘের মাঝে দেখতে পেলাম, তার হাসি মুখের সাথে। তিনি আমাকে ডাকলো, এবং আমি তাকে উড়িয়ে দিলাম।