হরতালিকা তেজ ব্রত কথা




কেমন আছো সবাই? আজকে আমি তোমাদের সঙ্গে হরতালিকা তীজ ব্রতের কাহিনীটা শেয়ার করবো। এই পবিত্র ব্রতটি অবিবাহিত মেয়েরা ভালো বর পাবার জন্য এবং বিবাহিত মহিলারা স্বামীর দীর্ঘায়ুর জন্য পালন করে।

ব্রহ্মার পুত্র মহাদেব শিবের সঙ্গে বিবাহ করার জন্য পর্বতরাজ হিমালয়ের কন্যা পার্বতী ভীষণ তপস্যা করেন। ১৬ বছর ধরে তিনি শুধু ফলপুষ্প খেয়ে এবং বেলপাতা ও জলে অর্ঘ্য দিয়ে কাটিয়েছেন। কিন্তু শিব তাঁর তপস্যায় বিঘ্ন ঘটিয়েছিলেন। তাই পার্বতী আরও কঠোর তপস্যা শুরু করেন। এবার তিনি শুধু বাতাস খেয়েই তপস্যা করতে থাকেন।

পার্বতীর এত কঠোর তপস্যা দেখে শিব তার সঙ্গে বিবাহ করতে রাজি হন। তখন দেবী পার্বতী হরিদ্রা (হলুদ) কাঠের পুতুল বানিয়ে তাতে শিবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন। পরে তিনি বিধিমতো সেই পুতুলকে বিবাহ করেন। এই কারণে এই ব্রতের নাম হরতালিকা তীজ।

এরপর দেবী পার্বতী স্বামী শিবকে সঙ্গে নিয়ে কৈলাসে চলে যান। সেদিন ছিল ভাদ্র মাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথি। তখন থেকেই এই দিনে মেয়েরা হরতালিকা তীজ ব্রত পালন করতে শুরু করে।

ব্রত পালনের নিয়ম:

  • ব্রতের আগের দিন থেকেই উপবাস শুরু করতে হয়।
  • ব্রতের দিন সকালে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে হলুদ কাঠের পুতুল বানিয়ে শিবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে হয়।
  • পুতুলটিকে নতুন কাপড় পরানো হয় এবং শিবের মতো শিঙ্গ, মস্তক এবং ত্রিশূল দিয়ে সাজানো হয়।
  • পুতুলটিকে বিধিমতো বিবাহ করা হয়।
  • এরপর পুতুলটির সঙ্গে রাতভর জাগরণ করা হয়।
  • পরের দিন সকালে পুতুলটিকে নিয়ে নদী বা পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়।

ব্রতের ফল:

বিশ্বাস করা হয় যে এই ব্রত পালন করলে মেয়েরা ভালো বর পায় এবং বিবাহিত মহিলারা স্বামীর দীর্ঘায়ুর লাভ করে।

আমার অভিজ্ঞতা:

আমিও কয়েক বছর ধরে হরতালিকা তীজ ব্রত পালন করছি। প্রতি বছরই আমার ব্রত পালন করার অভিজ্ঞতাটা অনন্য হয়। ব্রতের সময় আমি শুধু ফলপুষ্প খাই এবং জলে অর্ঘ্য দিই। রাতভর জাগরণ করি এবং শিবের নাম জপ করি। সকালে পুতুলটিকে বিসর্জন দিয়ে ব্রত সমাপ্ত করি।

এই ব্রত পালন করার পর আমার জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমি আরও ধৈর্যশীল হয়েছি এবং জীবনের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গিও ইতিবাচক হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে এই ব্রত পালন করার ফলেই আমার জীবনে এতো ভালোবাসা, শান্তি এবং সুখ এসেছে।

তোমরাও যদি এই তৃতীয়া তীজ ব্রত পালন করো, তাহলে আমার মনে হয় তোমাদের জীবনেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। তাই তোমরাও এই ব্রত পালন করে দেখো।

জয় হরি ఓম!