হীরামন্ডির সংযয় লীলা ভানসালী




একটি ঝলমলে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকা শহর কলকাতার হীরামন্ডি, যেখানে ক্যামেরা বলতে এখনও সেই ব্লাস্ট গ্রে বক্স ক্যামেরাগুলিই ছিলো, সংযয় লীলা ভানসালীর "হীরামন্ডি" এর প্রথম দিনের শ্যুট হয়েছিলো সেখানেই। সেই প্রথম দিনের ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন ভানসালী, যাকে দেখে সিনেমাপ্রেমী এবং ভানসালীর অনুরাগীদের মনে বইয়েছে উত্তেজনা।

কোটা কামরগুলির সারি, পুরনো সাজানো দরজা-জানলা, দাউদাউ করা কিছু আলোর আলোড়ন, আর তার মধ্যে থাকা দুটি নারী, যাদের চেহারায় স্পষ্ট, তাদের ভবিষ্যতের সমস্ত গল্প। সদ্য রিলিজ হওয়া টিজারে এর কয়েকটা ঝলক পাওয়া গেছে।

দুটি কোঠার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে দুজন তরুণী - রুকসানা এবং ইয়ামিনা। তাদের চেহারায় এখনও বাল্যকালের সেই আড়ষ্টতা রয়েছে, কিন্তু তাদের চোখে রয়েছে, ভবিষ্যতের পথের দিকে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প। টিজারের মুহূর্তে, রুকসানার মুখে ফুটে ওঠে একটি হালকা হাসি, এবং তারই মুখে বলা হয় ওই দুটি বাক্য, "সবাই আমাদের হিরে বলে ডাকে, কিন্তু আমরা ব্যাটারী, চার্জ নিয়ে বেড়ায়।

ভানসালীর সিনেমাগুলিতে শক্তিশালী নারী চরিত্র বরাবরই প্রাধান্য পেয়েছে, এবং "হীরামন্ডি"ও তার ব্যতিক্রম নয়। এই সিরিজের জন্য ১৯৪০ সালের কলকাতার রেখাপত্তর তৈরি করেছেন ভনসালী।

চলচ্চিত্রটি ১৯৪0-এর দশকে ব্রিটিশ ভারতের সময়েই সেট করা হয়েছে, যেখানে ভাগ্যের নির্মম খেলায় আবদ্ধ, তিনটি পতিতালয়ের মেয়েদের জীবন দেখা যাবে।

রুকসানা এবং ইয়ামিনা হল এই তিন নারীর মধ্যে দুটি, তৃতীয়টি সোনাক্ষীর ভূমিকায় অভিনয় করবেন মনীষা কৈরালা। তিনি রেড লাইট এলাকার চেতনা নামে সবচেয়ে জনপ্রিয় যৌনকর্মী ছিলেন। এই সিরিজে চরিত্রগুলোর বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চেহারাতেও পরিবর্তন দেখা যাবে, যা এমন এক অনন্য উপাদান যা ভারতীয় সিনেমায় খুব কমই দেখা গেছে।

প্রায় দুই মাস ধরে চেতনা চরিত্রের জন্য মনীষা কৈরালাকে প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া চলেছিল। অভিনেত্রীকে তাঁর শরীরের ভাষা, চেহারার অভিব্যক্তি এবং কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করতে হয়েছে।

একটি সাক্ষাৎকারে মনীষা কৈরালা বলেছেন, "আমি আমার ক্যারিয়ারের এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিলাম এবং রেড লাইট এলাকার মেয়েদের গল্প বলার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।"

সিরিজটিতে মনীষা কৈরালার পাশাপাশি আরও রয়েছেন সোনাক্ষী সিনহা, ঋচা চাড্ডা, শর্বরি ওয়াদগাঁওকার, অদিতি রাও হায়দারি এবং সানজনা সাংঘি।

এটি কেবল কোনও বিনোদনমূলক সিরিজ নয়, বরং সেই অসংখ্য নারীর গল্প যাদের নিজেদের অজান্তেই বিকিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাদের জীবনে আনন্দের থেকে বেদনা অনেক বেশি।