হীরামন্ডি, সঞ্জয় লীলা ভানসালির গোপন কাহিনী

আলোছায়া মেশানো কালকের মুম্বাই, সেখানেই লুকিয়ে আছে এক গোপন জগত—হীরামন্ডি। এই গল্প রচনা করেছেন মহানির্দেশক সঞ্জয় লীলা ভানসালি। নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া এই ওয়েব সিরিজে তুলে ধরা হয়েছে সেই সময়ের তওয়াইফদের জীবন, তাদের সংগ্রাম এবং তাদের প্রেম-ভালোবাসা।
আমাদের বহু কালেরই ইতিহাস, বিশেষ করে সামাজিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ তওয়াইফরা। তাদের জীবনযাপন, তাদের সংস্কৃতি, তাদের আদানপ্রদানের কাহিনী আমাদের কৌতূহল জাগায়, কিন্তু এই বিষয়ে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। সঞ্জয় লীলা ভানসালি নিজের ওয়েব সিরিজ ‘হীরামন্ডি’র মাধ্যমে তাদের গল্প তুলে ধরেছেন দারুণ সূক্ষ্ম ভাবে।
হীরামন্ডি একটি কাল্পনিক রেড-লাইট জেলা, যেখানে ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের আগে তওয়াইফরা বাস করতেন। এই ওয়েব সিরিজটি ছয়জন তওয়াইফের জীবনের গল্প বলে, যারা তাদের ভাগ্য নিজেদের হাতে নেন। তাদের জীবনে আসে একজন সুপরিচিত ব্যক্তি, একটি সম্ভাবনাময় রাজনীতিবিদ, যারা তাদের জীবনকে অন্য দিকে নিয়ে যায়।

রূপালি (মনীষা কৈরালা): হীরামন্ডির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তওয়াইফ, যার অসাধারণ সৌন্দর্য এবং ক্লাসিক্যাল মুদ্রা সকলকে মুগ্ধ করে।

দিলরুবা (সোনাক্ষী সিনহা): রূপালির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, একজন তরুণ এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী তওয়াইফ, যার কণ্ঠে আছে আগুনের জ্বালা।

মালকা জান (আদিতি রাও হায়দরি): একজন প্রতিভাবান নര്‍্তকী, যিনি তার প্রেমের জন্য সবকিছু উৎসর্গ করতে প্রস্তুত।

बेगम जान (रिचा चड्ढा): हिरमांडी की सबसे उम्रदराज और अनुभवी तवायफ, जो अपने ज्ञान और बुद्धि के लिए जानी जाती हैं।

शबनम (शरमीन सेगल): एक युवा और मासूम तवायफ, जो हिरमांडी की क्रूर दुनिया में अपना रास्ता खोजने की कोशिश कर रही है।

खुर्शीद (फारुख जफर): एक ट्रांसजेंडर तवायफ, जो अपनी ताकत और दृढ़ संकल्प से सभी को हैरान कर देती है।

এই ছয়জন তওয়াইফের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই ১৯৪০-এর দশকে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ভারতে তওয়াইফদের জীবন। তাদের সঙ্গীত, তাদের নাচ, তাদের রূপচর্চার মাধ্যমে তৎকালীন সমাজের চিত্রও উঠে এসেছে।
যে জিনিসটা ‘হীরামন্ডি’কে অন্য সব ওয়েব সিরিজ থেকে আলাদা করে তোলে, সেটা হল এর চরিত্র এবং তাদের সম্পর্ক। এই ছয়জন তওয়াইফের মধ্যে ভালোবাসা, ঈর্ষা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা—সবই রয়েছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় সম্পর্কটা হল রূপালি এবং দিলরুবার সম্পর্ক।
তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এতটাই তীব্র যে, তা মাঝে মাঝে তাদের বন্ধুত্বকেও হুমকির মুখে ফেলে। কিন্তু যখন প্রয়োজন হয়, তারা সবাই এক হয়ে দাঁড়ায়, এটাই সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
‘হীরামন্ডি’র আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল এর পোশাক এবং মেকআপ। সেই সময়ের পোশাক এবং অলঙ্কারগুলো কতটা জাঁকজমকপূর্ণ ছিল, তার একটা সুন্দর ঝলক আমরা এই ওয়েব সিরিজে পাই। তওয়াইফদের চোখের কাজল, ঠোঁটে সিঁদুর, চুলের ফুল—সবই মিলিয়ে একটি অসাধারণ দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে।
সব মিলিয়ে বলতে গেলে, ‘হীরামন্ডি’ একটি দারুণ ওয়েব সিরিজ। এর গল্প, চরিত্র এবং প্রযুক্তিগত দিক—সবই অসাধারণ। যদি আপনি ভারতের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি নিয়ে জানতে চান, তাহলে এই ওয়েব সিরিজটি অবশ্যই দেখুন।