হোলিকা দহন: রঙ্গিন উৎসবের পেছনের কিংবদন্তি ও তাৎপর্য
হোলিকা দহন হল একটি জনপ্রিয় হিন্দু উৎসব যা বসন্তের আগমন এবং মন্দিরের উপর সদগুণের বিজয় উদযাপন করে। প্রতি বছর ফাল্গুন পূর্ণিমায় হোলিকা দহন পালন করা হয়।
কিংবদন্তি
হোলিকা দহনের পিছনে একটি বিখ্যাত কিংবদন্তি রয়েছে। প্রহ্লাদ নামে একজন ভক্ত রাজা হিরণ্যকশিপুর পুত্র ছিলেন, যিনি বিষ্ণুর পরিবর্তে নিজেকে উপাসনা করার প্রচেষ্টা করেছিলেন। হিরণ্যকশিপুরের বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন, কারণ তিনি তার ভাইকে উপাসনা করতে অস্বীকার করেছিলেন।
হোলিকা কে একটি বিশেষ আশীর্বাদ প্রদান করা হয়েছিল যা তাকে আগুন থেকে অক্ষত রাখত। তিনি প্রহ্লাদকে নিয়ে একটি আগুনে বসেছিলেন, কিন্তু তখন একটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। প্রহ্লাদ বিষ্ণু ভক্ত ছিলেন বলে আগুন তাকে স্পর্শ করেনি, কিন্তু হোলিকা জ্বলে মারা যান।
তাৎপর্য
হোলিকা দহন মন্দিরের উপর সদগুণের বিজয়ের প্রতীক। প্রহ্লাদের ভক্তির বিজয় এবং হোলিকার মৃত্যু মন্দিরের শক্তি স্মরণ করিয়ে দেয়। উৎসবটি বসন্তের আগমনও উদযাপন করে, যা নতুন শুরু এবং আনন্দের সময়।
উদযাপন
হোলিকা দহন দুই দিন ধরে পালন করা হয়। প্রথম দিন হোলিকা নামে আগুনের একটি রাজা দহন করা হয়, যা হোলিকাকে প্রতীক করে। লোকেরা আগুনের চারপাশে নৃত্য করে, গান গায় এবং রঙ্গিন গুঁড়া ছুড়ে দেয়।
দ্বিতীয় দিনে, লোকেরা একে অপরের উপর রঙ্গিন গুঁড়া ছুড়ে দেয়, যা হোলি নামে পরিচিত। রঙ্গিন গুঁড়া আনন্দ, উচ্ছ্বাস এবং নতুন শুরুর প্রতীক।
সামাজিক তাৎপর্য
হোলিকা দহন একটি সামাজিক উৎসব যা সম্প্রদায়গত সাদৃশ্য এবং ভাইচারা বাড়ায়। এটি সকল ভেদাভেদকে ভুলিয়ে দেয় এবং সমস্ত লোককে আনন্দ ও উদযাপনে একত্রিত করে।
উৎসবটি প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার একটি উপায়ও। বসন্ত ঋতু কৃষকদের নতুন ফসলের জন্য আশা এবং আনন্দের সময় নিয়ে আসে। হোলিকা দহন এই আশা এবং আনন্দের উদযাপন।
উপসংহার
হোলিকা দহন একটি রঙ্গিন এবং আনন্দদায়ক উৎসব যা মন্দিরের বিজয়, বসন্তের আগমন এবং সামাজিক সাদৃশ্যকে উদযাপন করে। এটি একটি সময় যখন আমরা মন্দিরের শক্তির প্রশংসা করি, নতুন শুরুকে স্বাগত জানাই এবং সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে সবাই একত্রিত হই।