আত্মহত্যা কি কোন সমাধান? সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে আমাদের মনে বেঙ্গালুরুতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আত্মহত্যার পর। তিনি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক বছর ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে একটি সুইসাইড নোট রেখে গেছেন।
সাইবার শহর বেঙ্গালুরুতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষ স্ত্রীর সঙ্গে বাদানুবাদের জেরে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
অতুলের দাদার দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে,"প্রায় চার বছর আগে আমার ভাই অতুল সুভাষের সঙ্গে স্নেহা নামে এক তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্নেহা আমার ভাইকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করত। অতুলকে মারধর করত। তুচ্ছ কারণে তার উপর মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করত।" সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আতুলের দাদার অভিযোগ,"অতুলের কাছে প্রচুর টাকা ধার নিয়েও স্নেহা তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসাতে থাকে। তাকে চাপ দেয় তালাকের জন্য। বিষয়টি বহুবার দু'পরিবারের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।" সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
অতুলের দাদার দায়ের করা এফআইআরে আরও বলা হয়েছে,"কয়েক দিন আগে অতুল আমাকে জানিয়েছিল স্নেহা চাইছে তালাকের বিনিময়ে ৩ কোটি টাকা। আমার ভাই ঋণের বোঝায় ডুবে। টাকা কোথা থেকে দেবে? নিজেদের ছেলেমেয়েকে ও স্ত্রীকে কতটা ভালবাসতেন আমরা জানতাম। কিন্তু কাজের চাপ আর স্ত্রীর নির্যাতন সইতে না পেরে সে আত্মঘাতী হল।" সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আত্মহত্যার আগে ২৪ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখে গেছেন অতুল। সেই চিঠিতে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন। অতুলের লেখা সেই চিঠিতে বহু জায়গায় মিল পাওয়া গিয়েছে অতুলের স্ত্রী স্নেহা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
অতুল তাঁর সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন,"আমি যন্ত্রণার জীবন থেকে মুক্তি চাই। আমি অত্যন্ত অসহ্য অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। শারীরিক ও মানসিক ভাবে হিংস্রতা সহ্য করা খুব কষ্টদায়ক ছিল। আমার স্ত্রীর থেকে আমি শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হয়েছি। এমনকী সে আমার চরিত্র হননেরও চেষ্টা করেছে।" সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
অতুল আরও লিখেছেন,"প্রতিবারই যখন আমি আত্মহত্যার কথা বলতাম, আমার স্ত্রী হंसত। আমাকে মানসিক রোগী বলে তুচ্ছতাচ্ছিলো। সে আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। আমি নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলাম। আমি যন্ত্রণায় ছিলাম। এখন আর এই জীবন টানার শক্তি নেই।" সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
অতুল যে ২৪ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখে গেছেন, সেখানে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে একটি চিঠিও লিখেছেন। সেই চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ভারতে আত্মহত্যা প্রচার একটি অপরাধ। কিন্তু তবুও ভারতে এমন অনেক সিনেমা, ওয়েব সিরিজ ও টেলিভিশন শো তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে আত্মহত্যাকে প্রচার করা হচ্ছে।