Bharateeyudu 2
কি জানেন, "ভারতেএডু 2" সিনেমাটি কত বছর আগে মুক্তি পেয়েছিল? এমন প্রশ্ন করলে আপনাদের অনেকেরই মনে হতে পারে, এত আগে আর কে মনে রাখে! তবে আমি মনে রেখেছি। কারণ, এই সিনেমাটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্তগুলোর সঙ্গে জড়িত।
ছোট্টবেলায় আমাদের বাড়ির পাশেই একটি থিয়েটার ছিল। আমি প্রায়ই বাবা-মায়ের সঙ্গে সেখানে সিনেমা দেখতে যেতাম। একবার সেখানে "ভারতেএডু 2" সিনেমার পোস্টার দেখে আমার খুব ইচ্ছে হয়েছিল, এটি দেখার। তবে বাবা-মা তখন বলেছিলেন, আমি এখনও খুব ছোট, তাই সিনেমাটি দেখতে পারব না।
কিন্তু আমার দাদা ছিলেন আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তিনি আমাকে খুব ভালোবাসতেন এবং আমার সব ইচ্ছে পূরণের চেষ্টা করতেন। আমি তাকে জিদ করে বললাম, আমি সিনেমাটি দেখতে চাই। তিনি প্রথমে না করলেও পরে রাজি হয়ে গেলেন।
সেদিন সকাল থেকেই আমি খুব উচ্ছ্বসিত ছিলাম। দুপুর হতেই আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম। থিয়েটারে গিয়ে টিকিট কিনে নিয়ে আমরা ভেতরে গেলাম। সিনেমাটি শুরু হতেই আমার মনোযোগ পুরোপুরি পর্দার দিকে চলে গেল।
সিনেমার গল্পটি ছিল রাজেশ নামের এক যুবকের। সে ছিল একজন জাদুকর। সে তার জাদুর মাধ্যমে একদিন পৃথিবীকে বাঁচিয়েছিল। সেদিন থেকে সে হয়ে উঠেছিল "ভারতেএডু"। কিন্তু তার এই কাজের জন্য তাকে তার পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল।
সিনেমাটির একটি দৃশ্যে দেখানো হয়েছিল, রাজেশ তার পরিবারের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সে একদিন এক ক্যাসিনোতে গিয়েছিল। সেখানে তার সঙ্গে সুন্দরী নীলু নামের এক যুবতীর দেখা হয়েছিল। নীলু ছিল একজন গায়িকা।
রাজেশ এবং নীলু দুজনেই প্রথম দেখাতেই একে অপরের প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। তারা দুজনে একসঙ্গে অনেক সুখের মুহূর্ত কাটিয়েছিল। কিন্তু তাদের প্রেমের পথে এসে হাজির হয়েছিল রাজেশের সাবেক প্রেমিকা প্রিয়া।
প্রিয়া ছিল রাজেশের কলেজের সহপাঠী। সেও রাজেশকে ভালোবাসত। কিন্তু রাজেশ তার প্রেম প্রত্যাখ্যান করেছিল। প্রিয়া এই কথা কখনও ভুলতে পারেনি। সে রাজেশের জীবনে ফিরে এসে তার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল।
রাজেশ, নীলু এবং প্রিয়ার মধ্যে ত্রিকোণ প্রেমের জটিলতা নিয়েই "ভারতেএডু 2" সিনেমার গল্পটি এগিয়েছে। সিনেমাটির শেষে দেখানো হয়েছিল, রাজেশ তার পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন করেছে। আর নীলু তার জীবনে শান্তি ফিরিয়ে এনেছে।
ছোট্টবেলায় "ভারতেএডু 2" সিনেমাটি আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছিল। এটি আমাকে শিখিয়েছিল, জীবনে যত বাধাই আসুক না কেন, শেষ পর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়। এটি আমাকে প্রেমের শক্তি সম্পর্কেও শিখিয়েছিল। যে কোনও কঠিন পরিস্থিতিতেও প্রেম এনে দেয় আশা এবং শান্তি।
আজও যখন "ভারতেএডু 2" সিনেমাটি টেলিভিশনে প্রচারিত হয়, তখনই আমার সেই সব স্মৃতিগুলো সজীব হয়ে ওঠে। আর আমি নিজেকে আবারও সেই ছোট্টবেলার দিনে ফিরে যেতে দেখি।