GN Saibaba
মহান মানুষের মহান জীবনের ভাষ্য।
মহান মানববাদি, ভারতের অন্যতম প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক জ্ঞান সাগর ডক্টর জিএন সাইবাবা। একটি গরিব অনগ্রসর বর্ণের পরিবারে জন্ম। নিঃস্ব অবস্থার মধ্যে কঠোর পরিশ্রম আর লেখাপড়া। প্রথমে স্কুল শিক্ষক, তারপর ডক্টরেট ডিগ্রী নিয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক। সুস্থ স্বাভাবিক জীবন। কিন্তু ঠিক তখনই তিনি নিজের সাথে একটা লড়াই শুরু করলেন। তা হলো ভারতের সর্ব নিম্ন বর্ণ ও শ্রেণীর প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই।
তিনি জানতেন ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য সংবিধান আছে। তাই কেবল কথার বানে নয়, কাজের মাধ্যমে ও এই অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করলেন। দল, সমর্থন নিয়ে নিজে একাই নয়, তিনি সাধারণ গরিব মানুষকেও সংগঠিত করতে শুরু করলেন। দুর্নীতিগ্রস্ত ভারতীয় রাজনীতির থেকে শুরু করে, নকশালিদের প্রতি ভারতীয় রাষ্ট্রের দমন নীতির বিরুদ্ধেও তিনি কণ্ঠস্বর তুললেন।
প্রথম দিকে ক্ষমতাবানেরা তাকে উপেক্ষা করতে থাকলেন কিন্তু যখন তার প্রতিবাদ আর সংগঠন ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকল তখন তারা তাকে নিশানা করলো। নানান মামলা দায়ের করা হলো, গ্রেফতার করা হলো। কিন্তু যে লড়াই সাধারণ মানুষের অধিকারের জন্য তা আর থামল না। কারণ তার পিছনে ছিলো সাধারণ মানুষের সমর্থন ও তাদের আশীর্বাদ।
আর এই সময়ই পশ্চিমবঙ্গের কিছু শিক্ষক তার সাথে যোগাযোগ করলো। ভারতের সাধারণ শিক্ষিত মানুষের মধ্যে জেগে উঠল তার প্রতি আস্থা। আর এই আস্থার ফলেই পশ্চিমবঙ্গেও শুরু হল তার সংগঠন। গ্রামে গ্রামে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ শিক্ষিত মানুষের মধ্যে জেগে উঠল সামাজিক দায়িত্ব। তারা সংগঠিত হতে শুরু করলো। সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করার জন্য তারা গ্রামে গ্রামে সেমিনার, সমাবেশের আয়োজন করলো। আর এই সব কিছুর কারনেই ভারতের শাসকশ্রেণী আর ভয় পেল।
ভারতের ক্ষমতা বানদেরা ভেবেছিল নিঃস্ব, অশিক্ষিত ভারতের গরিব মানুষকে দিয়ে তারা যা ইচ্ছে তা করতে পারবে, যেভাবে ইচ্ছে তাদের শোষণ করতে পারবে। কিন্তু ডক্টর সাইবাবা সেই ভ্রান্তি ভেঙে দিয়েছেন। আজ তিনি ষাট বছর বয়সের একটি বৃদ্ধ। চোখে মুখে বয়সের ছাপ। কিন্তু তার মধ্যে আজও সেই একই উদ্যম। বিদ্রোহী চেতনায় আজও তিনি আগুন। কারণ, এদেশের দলিত, আদিবাসী, নারী ও সংখ্যালঘুদের মুক্তির লড়াই তিনি এখনো শেষ করেননি।