IC 814 দ্য কান্দাহার হাইজ্যাক
আবারো এলো সেই সেপ্টেম্বর মাস।
আর আবারো মনে পড়ল সেই কালো দিনের কথা যা ভুলে থাকার চেষ্টা করেও ভোলা যায় না।
24 সেপ্টেম্বর, 1999। আপনারা তো জানেনই, ভারতের বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট IC 814 কান্দাহার যাচ্ছিলো যাত্রী নিয়ে। আচমকা সেই বিমান কিডন্যাপ করা হয়। তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিমান। ভেতরে আর্ত্রনাদ করছে যাত্রীরা। বিমানের কর্মীরা আটকে আছে বিদেশি মাটিতে।
ভারতের তখনকার অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারের সামনে এক কঠিন দ্বিধা। উদ্ধার করা হবে কি কর্মীদের?
না কি সংখ্যাগুরু মুসলিম বন্দিদের ছেড়ে দেওয়া হবে?
কিন্তু তাতে তো সন্ত্রাসকে সমর্থন দেওয়ার মতো কাজ হবে। সন্ত্রাসের পথ খুলে যাবে আমাদের দেশে। ভারত সরকারকে দুদিকে চিন্তা করতে হচ্ছে।
অবশেষে, বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকরা এবং বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সাহায্যে ভারত সরকার ঘটনার প্রতিবাদে মুক্তি পাওয়া তিন সন্ত্রাসবাদীদের সাথে কর্মীদের বিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের কাছে এটি হতাশার বিষয় ছিল। কিন্তু, তখন আর কোনও উপায় ছিল না।
8 অক্টোবর, 1999-এ, 76 দিন পর, কর্মীদের মুক্তি দেওয়া হয়। এবং ভারত সরকার তিন সন্ত্রাসবাদীকে তাদের দেশে ফিরে যেতে দেয়। কান্দাহারের এই ঘটনা ভারতে সন্ত্রাসবাদের প্রথম বড় ঘটনা।
সেদিন আটকে পড়া যাত্রী কুমার মোর্টি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "যখন আমরা দেখলাম আমাদের বিমানটিকে কিডন্যাপ করা হয়েছে, তখন সত্যিই মনে হল আমাদের জীবনের শেষদিন। আমাদের আতঙ্কে প্রায় মরে যাচ্ছিলাম।
দীর্ঘ 76 দিন তালেবানের হেফাজতে আমরা অমানবিক অত্যাচার সহ্য করেছি।"
কুমার মোর্টি আরো বলেন, "যখন আমাদের মুক্তি দেওয়া হয়, তখন আমরা ভেবেছিলাম আমাদের ফেরার পথ সহজ হবে। কিন্তু, তা হয়নি। আমাদের দেশেও আমাদের বেশ কিছুদিনের লাঞ্ছনা সইতে হয়েছে। আমাদের দেশদ্রোহী বলে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। আমরা সন্ত্রাসবাদীদের সাথে যোগসাজশ করেছি বলে অভিযোগ উঠেছিল।"
আজও এই দুঃখের দিনটি ভোলেননি যাত্রীরা। তাদের স্মৃতিতে তাজা রয়েছে সেই দিনটির ভয় এবং অন্ধকার। কান্দাহার হাইজ্যাক, ভারতের ইতিহাসের একটি কালো দিন।