Leptospirosis: বর্ষাকালের ভয়ঙ্কর রোগ
আমাদের প্রিয় বর্ষাকালের সাথে ঘনিষ্টভাবে জড়িয়ে আছে মারাত্মক কিছু ব্যাকটেরিয়া সংক্রান্ত রোগ। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হল লেপটোস্পাইরোসিস, যা কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন একধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ঘটে। এই ব্যাকটেরিয়া বৃষ্টির পানি, প্লাবনের পানি এবং পশুর মূত্রের সংস্পর্শে আসার ফলে সংক্রমিত হয়।
বর্ষাকালে লেপটোস্পাইরোসিসের প্রাদুর্ভাব অনেক বেড়ে যায়। কারণ এসময় পানির সরবরাহ বাড়ে এবং প্রচুর জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে। ফলে জীবাণুগুলো খুব দ্রুত বিস্তার লাভ করে। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে খালি পায়ে হাঁটা, পানি জমে থাকা জায়গায় দাঁড়ানো বা জলের সংস্পর্শে আসার ফলে এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এমনকি দূষিত মাটি বা কাদার সংস্পর্শে এলেও লেপটোস্পাইরোসিস হতে পারে।
লেপটোস্পাইরোসিসের লক্ষণগুলো অনেক মৃদু হতে পারে, যার ফলে অনেকেই এটিকে সাধারণ ফ্লু বা সর্দি-কাশি মনে করে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণগুলো মারাত্মক হতে পারে। লেপটোস্পাইরোসিসের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, শীত লাগা, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা এবং কাঁপুনি। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে চোখ লাল হয়ে যাওয়া, অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া, যকৃত বা কিডনির ক্ষতি এবং ফুসফুসে প্রদাহের মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
লেপটোস্পাইরোসিস ভয়ঙ্কর হলেও এটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। বর্ষাকালে কয়েকটি সতর্কতা অবলম্বন করলে এই রোগের ঝুঁকি অনেক কমানো যায়। এজন্য চিকিৎসকরা বর্ষাকালে জল জমে থাকা জায়গা এড়িয়ে চলার, জুতা পড়ে বের হওয়ার এবং দূষিত পানি বা কাদার সংস্পর্শে না আসার পরামর্শ দেন। এছাড়াও মৃত পশু বা প্রাণীর মলমূত্র থেকে দূরে থাকা এবং হাত ধোয়া, পরিষ্কার পানি পান করা, খাবার ভালোভাবে রান্না করা এবং খাবারের জন্য পরিষ্কার জল ব্যবহার করার মতো সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রয়োজন।
লেপটোস্পাইরোসিস হলে চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। তবে চিকিৎসা শুরু করার আগে রোগ নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষা এবং মল পরীক্ষার মাধ্যমে লেপটোস্পাইরোসিস নির্ণয় করা হয়। এই রোগে আক্রান্তদেরকে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা দেয়া না হলে কিডনি, যকৃত এবং ফুসফুসের মতো অঙ্গগুলো স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই লেপটোস্পাইরোসিসের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।