NEET PG'র মুখোশের আড়ালে চিকিৎসকদের নিয়ে সমাজের ভ্রান্ত ধারণা




এই শব্দদুটো উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সকলেরই মনে ভেসে ওঠে এক অসম্ভব কঠিন প্রতিযোগিতার ছবি। তবে, এই প্রতিযোগিতা কেবল অসম্ভব নয়, বরং অমানবিকও।
আমাদের দেশের অসংখ্য তরুণ চিকিৎসক প্রতিবছর এই প পরীক্ষা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এমনকি সরকারি চিকিৎসাকর্মীদেরও এই পরীক্ষা দিতে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, কী কারণে?
এই পরীক্ষার অবজ্ঞেয় কঠিনতার কারণ হিসাবে জাতীয় পরিকল্পনা ও নির্মাণ সংস্থা (এনপিসিই) শুধু একটি কথা বলে থাকে, “মান বজায় রাখার জন্য”। কিন্তু কীভাবে মান বজায় রেখেছে পরীক্ষার এই দুর্বোধ্য কঠিনতা, তা এখনও পর্যন্ত কেউ বুঝতে পারেননি।
আসলে, এই পরীক্ষার কঠিনতা শুধুমাত্র পরীক্ষকদের মান বজায় রাখার কারণ নয়, বরং এটি একটি কল্পিত চেহারার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সমাজের ভ্রান্ত ধারণার ফল।
একজন “ভালো চিকিৎসক” কেবল তিনিই, যিনি NEET PG-তে ভালো ফল করেছেন।
এটি একটি খুব সাধারণ ভ্রান্ত ধারণা, যা আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল।
একজন চিকিৎসকের সামগ্রিক দক্ষতা মূল্যায়ন করার জন্য NEET PG হলো কেবল একটি পরীক্ষা। এটি একজন চিকিৎসকের যোগ্যতা নির্ধারণের একটিমাত্র মানদণ্ড নয়।
একজন চিকিৎসকের সামগ্রিক দক্ষতার মধ্যে আসে তাঁর জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং সহানুভূতি। NEET PG শুধুমাত্র একজন চিকিৎসকের জ্ঞান পরীক্ষা করতে পারে। এটি তাঁর দক্ষতা, অভিজ্ঞতা বা সহানুভূতি সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না।
একজন চিকিৎসকের সহানুভূতির চেয়ে তাঁর জ্ঞান বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এটি আরেকটি ভ্রান্ত ধারণা, যা আমাদের সমাজে খুব প্রচলিত। কিন্তু এটিও সম্পূর্ণ ভুল।
একজন চিকিৎসকের জ্ঞান এবং সহানুভূতি দুটোই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। একজন চিকিৎসকের রোগীকে কীভাবে চিকিৎসা করতে হবে, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু রোগীর কষ্ট বোঝাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন চিকিৎসকের সহানুভূতি না থাকলে তিনি রোগীর সঙ্গে যোগ স্থাপন করতে পারবেন না এবং রোগীর চিকিৎসায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে, একজন চিকিৎসকের জ্ঞান না থাকলে তিনি রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন না, যা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
সুতরাং, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, একজন ভালো চিকিৎসক হওয়ার জন্য শুধুমাত্র NEET PG-তে ভালো ফল করা যথেষ্ট নয়। একজন ভালো চিকিৎসক হওয়ার জন্য জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং সহানুভূতি, সবই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।