RM বীরপ্পন: হিরো না ভিলেন?




এক সাধারণ কিষান পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন রমণগৌড় মুথুলাঙ্গু শেঠু বীরপ্পন, যিনি পরে কুখ্যাত বনের ডাকাত আরএম বীরপ্পন হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
বীরপ্পন ভারতের দক্ষিণতম রাজ্য তামিলনাড়ুর সাত্তুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কিংবদন্তি রয়েছে যে, বীরপ্পনের ডাকাতির জীবনে পা রাখার কারণ ছিল পুলিশি অত্যাচার। বলা হয়ে থাকে যে, পুলিশ তার একটি মহিষ চুরি করে নিয়ে যায়, যা তার পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস ছিল। এর প্রতিশোধ নিতে বীরপ্পন জঙ্গলে চলে যান এবং একটি ডাকাত দল গঠন করেন।
বীরপ্পন এবং তার দল সরকারি কর্মচারী, ধনী ব্যক্তি এবং পুলিশকে লক্ষ্যবস্তু করেছিলেন। তারা অপহরণ, খুন এবং চাঁদাবাজির মতো ভয়াবহ অপরাধের জন্য দায়ী ছিল। বীরপ্পনের নাম তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং কেরলের ত্রি-সীমান্ত এলাকায় আতঙ্কের sinonous হয়ে ওঠে।

যদিও বীরপ্পন একটি নির্মম ডাকাত ছিলেন, কিন্তু তিনি তামিলনাড়ুর কিছু অংশে কিছু মানুষের কাছে লোককাহিনী হয়ে উঠেছিলেন। তারা তাকে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মচারীদের এবং পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য একটি জননায়ক হিসেবে দেখত। বীরপ্পন স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খাদ্য ও সাহায্যও পেতেন।

বীরপ্পনের ডাকাতির রাজত্ব প্রায় দুই দশক ধরে চলে। তাকে ধরতে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল, কিন্তু সে সবসময়ই তাদের হাতে পড়ার হাত এড়িয়ে যেত। অবশেষে, তাকে ২০০৪ সালের ১৮ অক্টোবর তামিলনাড়ুর ধর্মপুরিতে ঘেরাও করে গুলি করে হত্যা করা হয়।

বীরপ্পনের মৃত্যু তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং কেরলের মানুষের কাছে একটি বড় ঘটনা ছিল। কিছু মানুষ তার মৃত্যুকে স্বস্তির শ্বাস হিসাবে দেখেছিল, অন্যরা তাকে একটি কিংবদন্তি হিসাবে শোক প্রকাশ করেছিল। বীরপ্পনের নাম এবং তার অপরাধের গল্প আজও এলাকায় প্রচলিত রয়েছে।

বীরপ্পন কি একজন হিরো ছিলেন নাকি একজন ভিলেন? এটি একটি প্রশ্ন যা আজও লোকেরা তর্ক করে। কিন্তু এক জিনিস নিশ্চিত, তিনি ভারতের ডাকাতির ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

  • বীরপ্পনের ডাকাতির প্রাথমিক কারণ: পুলিশি অত্যাচার
  • বীরপ্পনের লক্ষ্য: সরকারি কর্মচারী, ধনী ব্যক্তি এবং পুলিশ
  • বীরপ্পনের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ: অপহরণ, খুন এবং চাঁদাবাজি
  • বীরপ্পনের ডাকাতির রাজত্বের দৈর্ঘ্য: প্রায় দুই দশক
  • বীরপ্পনের মৃত্যুর তারিখ এবং ঘটনাস্থল: ১৮ অক্টোবর, ২০০৪, তামিলনাড়ুর ধর্মপুরি
বীরপ্পন সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য:
  • বীরপ্পন ছিলেন একজন দক্ষ শিকারী এবং ট্র্যাকার।
  • তিনি দুটি ভাষা, তামিল এবং কন্নড় সাবলীলভাবে কথা বলতে পারতেন।
  • বীরপ্পন একটি সর্বজনীন ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং তিনি প্রায়শই গ্রামবাসীদের সহায়তার জন্য ব্যবহৃত হতেন।
  • তিনি খুবই কুসংস্কারী ছিলেন এবং তিনি জাদু-টোনায় বিশ্বাস করতেন।
  • বীরপ্পন একাধিক অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, যার মধ্যে হত্যা এবং অপহরণও রয়েছে।
বীরপ্পন সম্পর্কে কিছু বিখ্যাত উক্তি:
  • "আমি একজন চোর নই। আমি একজন বিপ্লবী। আমি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।" - আরএম বীরপ্পন
  • "বীরপ্পনের মতো কিংবদন্তি প্রতিদিন জন্ম নেয় না।" - একজন অজ্ঞাত তামিল কবি
  • "বীরপ্পন একজন নির্মম ডাকাত ছিলেন, কিন্তু তিনি এলাকার কিছু মানুষের কাছে একটি লোককাহিনী ছিলেন।" - তামিলনাড়ুর একজন সাংবাদিক