Vicky Vidya: আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কি বাল্য বিবাহের প্রক্রিয়াকে পোষণ করছে?




আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাটা যেন এখন সম্পূর্ণ বিপদগামী মনে হয়। শিক্ষা হওয়া উচিত জ্ঞানদানের উৎস, ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার অস্ত্র। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এখনকার দিনে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাল্য বিবাহকে পোষণের জায়গা।

গত মাসে আমাদের এলাকায় দু'টি বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটেছে। দু'টি কন্যাই ছিল স্কুলপড়ুয়া। একজন নবম শ্রেণীর ছাত্রী এবং আরেকজন সবে দশম শ্রেণীতে উঠেছে। দু'জনেই ছিল মেধাবী ছাত্রী। তবে, তাদের পরিবারগুলো তাদেরকে তাদের পড়াশোনা থামিয়ে দেয় এবং জোর করে তাদের বিয়ে দেয়।

এই ঘটনাগুলি আমাকে ভীষণ চিন্তিত করে তুলেছে। আমি ভাবছি, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কী এখন বাল্য বিবাহকে পোষণ করছে?

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে এটি শুধুমাত্র ছেলেদের পড়াশোনার ওপর বেশি গুরুত্ব প্রদান করে। মেয়েদের পড়াশোনার জন্য বেশি সুযোগ নেই। ফলে, অনেক মেয়েই অল্প বয়সে বিয়ে করে তাদের পড়াশোনা থামিয়ে দেয়।

বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ মেয়ের বিয়ে হয়। এর মধ্যে অনেক মেয়ের বয়স ১৮ বছরের নিচে হয়। বাল্য বিবাহ একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটি মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ক্যারিয়ার অর্জনের অধিকারকে বঞ্চিত করে।

আমাদের দেশে বাল্য বিবাহের একটি বড় কারণ হল দারিদ্র্য। অনেক পরিবার তাদের মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেন যাতে তারা আর অতিরিক্ত খরচ না করেন। এ ছাড়াও, কিছু পরিবার মনে করে যে বাল্য বিবাহ হলো তাদের মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি উপায়।

তবে, বাল্য বিবাহের কোন সুফল নেই। এটি মেয়েদের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। তাই, আমাদের সরকারের এবং শিক্ষা ব্যবস্থার বাল্য বিবাহ রোধে আরও বেশি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

আমাদের সরকার বাল্য বিবাহকে প্রতিরোধ করার জন্য বিভিন্ন আইন পাশ করেছে। তবে, এই আইনগুলি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে না। এ ছাড়াও, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটি বাল্য বিবাহ রোধের জন্য আরও কিছু করতে পারে।

  • শিক্ষাদানে মেয়েদের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করা
  • মেয়েদের পড়াশোনা থামানোর কারণগুলি নির্মূল করা
  • বাল্য বিবাহের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা
  • পরিবর্তন আনার জন্য সমাজের সাথে অংশীদারিত্ব করা

আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হলো সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার যা আমাদের বাল্য বিবাহের মতো কুপ্রথাগুলি দূর করতে সাহায্য করতে পারে। তাই, আমাদের সরকারের এবং শিক্ষা ব্যবস্থার এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে আমাদের মেয়েরা সুরক্ষিত থাকে এবং তাদের পুরো সম্ভাবনা অর্জন করতে সক্ষম হয়।